শ্রীহট্ট রণাঙ্গনে সংঘর্ষ অব্যাহত
সপ্তাহকাল ব্যাপিয়া শালুটিকর বিমানঘাটি মুক্তিবাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ থাকার পর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী শ্রীহট্ট জেলার অভ্যন্তরে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের উপর অধিকার সংস্থাপনের চেষ্টা করিতেছে বলিয়া জানা যায়। ইতিমধ্যে বিমানযোগে পাকিস্তানী সৈন্যদের জন্য নূতন অস্ত্র ও রসদ আসিয়া পৌঁছিয়াছে। সংবাদে প্রকাশ, শালুটিকর হইতে সৈন্যবাহিনীর তিনটি দল মৌলবীবাজার, ডাউকী এবং ছাতকের দিকে অগ্রসর হয়।
মৌলবীবাজার অভিমুখী দলটি সেরপুর ফেরী ঘাটের নিকটে মুক্তিফৌজের হাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। বিমান হইতে বোমা ও গোলাবর্ষণ করিয়াও মুক্তিফৌজের প্রতিরোধ ভাঙ্গিতে না পারায় সৈন্যবাহিনী শেষ পর্যন্ত পিছু হটিতে বাধ্য হয়। এই সংঘর্ষে অন্ততঃ কুড়িজন সৈন্য হত, ইহারা দেশী নৌকায় করিয়া অগ্রসর হইতে চেষ্টা করিয়াছিল অপর একটি দলকে খাদিমনগরের কাছে মুক্তিফৌজ হটাইয়া দেয়। শ্রীহট্ট অঞ্চলে মুক্তিফৌজ এখন গেরিলা যুদ্ধের আশ্রয় গ্রহণ করিতেছেন।
দূর পাল্লার ভারী অস্ত্র না থাকায় সরাসরি লড়াই-এর সম্মুখীন হইতে তাহাদের কিছুটা অসুবিধা হইতেছে। ভারত সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলি সীল করিয়া শ্রীহট্ট জেলার অর্থনৈতিক জীবন সম্পূর্ণ অচল করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যেই হানাদার বাহিনী এখন অভিযান চালাইতেছে বলিয়া প্রকাশ।
যুগশক্তি, ২৩ এপ্রিল ১৯৭১
সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন