You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাঙলাদেশে মা এসেছেন আনন্দময়ী রূপে নয়, রুদ্রাণী রূপে
(ষ্টাফ রিপোর্টার)

স্মরণকালের ইতিহাসে এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। বাঙলাদেশে সোনার ধান, শ্যামল ঘাসের মাথায় শিশিরের ঝালর, পাতায় পাতায় বিচিত্র বর্ণের ফুলের সমারোহ, নীল আকাশের গায়ে রাজহাঁসের ঝাকের মত মেঘ নিয়ে শরৎ এসেছে, অথচ মা আসেননি।
এবার কিন্তু তাই হলো। বাঙলাদেশের কোথাও দুর্গাপূজা হচ্ছে না। মন্দিরগুলো বুকের মধ্যে এক দারুণ শূন্যতা নিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যে অনুষ্ঠানে বাঙালীর জীবনে আনন্দের বান ডেকে যেত, সেখানে আজ হাহাকারকান্নায় শ্মশানের ছায়া মূর্ত হয়ে উঠেছে, সেখানে আনন্দময়ীর স্থান কোথায়? আনন্দময়ীর স্থান নেই, সে কথা ঠিক। কিন্তু দুর্গতিনাশিনী দুর্গার? তিনিও কি আসবেন না?
কী করে নতুন করে আসবেন? তিনি তো সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর অকালবোধনে অনেক আগেই হানাদার দানবদের নিশ্চিহ্ন করে দেবার জন্য বাংলার মাটিতে পা রেখেছেন, দৈনন্দিন অগণিত লুঠেরা বর্গীর ধরাশায়ী হওয়ার খবর বয়ে আনছে তারই আভাস।
সুতরাং এবার বাঙলা দেশে মায়ের আবির্ভাব আনন্দময়ী রূপে নয়-অসুর সংহারকারিনী রুদ্রানীরূপে আকৃতিতে আসেননি, এসেছেন প্রকৃতিতে ধর্ম, কর্ম ও সত্যে।
সাপ্তাহিক বাংলা ॥ ১: ২ ॥ ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!