You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.01.15 | পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমান - ঢাকায় পাক-প্রেসিডেন্টের সুস্পষ্ট উল্লেখঃ শীঘ্রই ক্ষমতা অর্পণ করা হবে বলে ঘোষণা | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবর রহমান
ঢাকায় পাক-প্রেসিডেন্টের সুস্পষ্ট উল্লেখঃ
শীঘ্রই ক্ষমতা অর্পণ করা হবে বলে ঘোষণা

নয়াদিল্লী, ১৪ জানুয়ারি (ইউ-এন-আই) – আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমানের নাম পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী রূপে উল্লেখ করে পাক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আজ ঘোষণা করেন যে, খুব শীঘ্রই শেখ মুজিবরের হাতে সমস্ত ক্ষমতা অর্পণ করা হবে।
করাচীর পথে ঢাকা ত্যাগের প্রাক্কালে পাক প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের কাছে বলেন, শেখ মুজিবরের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেই দেশের সামগ্রিক উন্নতি ঘটবে। শেখ মুজিবর ও আওয়ামী লীগের আরো ৫জন সদস্যের সঙ্গে তিনি জাতীয় পরিষদ আহ্বান, দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি এবং অন্যান্য জাতীয় সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করেন। ইয়াহিয়া খান বলেন যে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি খুশি হয়েছেন।

শেখ মুজিবর রহমান
ক্ষমতা হস্তান্তর সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ইতিপূর্বে বলেছেন যে, সংবিধান প্রেসিডেন্টের স্বীকৃতি দানের পরই নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। ঢাকা বেতার থেকে উপরোক্ত তথ্য প্রচারিত হয়েছে। শেখ মুজিবরের সঙ্গে ইয়াহিয়া খানের একদফা আলোচনা শেষ।
রাওয়ালপিন্ডি থেকে এ-পি জানাচ্ছে, গতকাল ঢাকায় শেখ মুজিবর রহমানের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের আলোচনা শেষ হয়েছে। ইতিপূর্বে তিনি শ্ৰী জেড, এ, ভুট্টোর সঙ্গেও একবার আলোচনা করবেন। তারপরই সংবিধান পরিষদ আহ্বানের তারিখ স্থির হতে পারে।
যদিও নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে সংবিধান সম্পর্কে শ্রীভুট্টোর মতামতের সঙ্গে শ্রী খানের মতামতের তীব্র পার্থক্য লক্ষ্য করা গিয়েছিল তবু রাষ্ট্রপতি খানের সঙ্গে আলোচনার পর শ্রী ভুট্টো তার কড়া মন্তব্যাদি বন্ধ করেন। সম্প্ৰতি শ্ৰী ভুট্টো রাওয়ালপিন্ডিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, সংবিধানের ব্যাপারে মতৈক্য স্থাপনের জন্য প্রয়োজন হলে তিনি দশবারও ঢাকায় যেতে প্রস্তুত। অন্যদিকে শেখ মুজিবরও সম্প্রতি বলেছেন যে, সংবিধান রচনার ব্যাপারে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের নেতাদের সঙ্গেই আলোচনা করবেন। ৩২৩ জন সদস্যের জাতীয় পরিষদে ইতিমধ্যে শেখ মুজিবরের আওয়ামী লীগের সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ১৬৭ জন। পরিষদের অধিবেশন আরম্ভ হবার পর চার মাসের মধ্যে সংবিধান রচনা করতে হবে এবং তা যদি রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের মনঃপূত হয় তাহলেই আমলে আসবে।
দৈনিক কালান্তর, ১৫ জানুয়ারি ১৯৭১

সূত্র: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ . ১ম খণ্ড – মুনতাসীর মামুন