You dont have javascript enabled! Please enable it! 1969.03.06 | শেখ মুজিব বলেন : আমি জনগণের কথাই প্রতিধ্বনিত করিব | সংবাদ - সংগ্রামের নোটবুক

সংবাদ
৬ই মার্চ ১৯৬৯
শেখ মুজিব বলেন : আমি জনগণের কথাই প্রতিধ্বনিত করিব

ঢাকা, ৫ই মার্চ (এপিপি)।- আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান অদ্য রাত্রে এখানে বলেন, “আমি যেখানেই থাকি না কেন আমি জনগণের সাথেই থাকিব এবং জনগণের কথাই বলিব। কেহই আমাকে জনগণ হইতে বিচ্ছিন্ন করিতে পারিবে না।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সম্ভাবনা সম্পর্কে যে সকল খবর প্রকাশিত হইয়াছে সাম্প্রতিক আন্দোলন সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে শেখ মুজিব বলেন, “আমি নেতা নই, আমি একজন কর্মী—আমি যেখানেই থাকি জনগণের সাথেই থাকিব। ”
শেখ মুজিব কেন্দ্রীয় গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ-এর বৈঠকে যোগদানের জন্য আগামীকল্য লাহোর যাইতেছেন। তিনি বলেন যে, আগামী ১০ই মার্চ রাওয়ালপিণ্ডিতে গোলটেবিল বৈঠক শুরু করার পূর্বে ‘ডাক’-এর বৈঠকে একটি সর্বসম্মত ফর্মূলা প্রণয়নে তাঁহারা চেষ্টা পাইবেন।
সে সম্পর্কে জনৈক সাংবাদিক তাঁহাকে প্রশ্ন করিলে শেখ মুজিব বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত এই ব্যাপারে কিছুই জানি না কেবল সংবাদপত্রে এই ধরনের খবর পাঠ করিয়াছি।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হইলে এবং তাঁহাকে আমন্ত্রণ জানান হইলে তিনি উহাতে যোগদান করিবেন কিনা, জিজ্ঞাসা করা হইলে শেখ মুজিব বলেন যে, ‘ইহা একটি গদির প্রশ্ন।’ সংখ্যাসাম্য প্রশ্নটি পুনরায় উত্থাপন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ মুজিব বলেন যে, রেসকোর্স ময়দানের জনসভাতে তিনি এই ব্যাপারে যে কথা বলিয়াছেন, তিনি উহাতে অবিচল রহিয়াছেন। এখানে উল্লেখ থাকিতে পারে যে, তিনি উক্ত জনসভায় বক্তৃতাকালে জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতিনিধিত্বের দাবী জানাইয়াছিলেন। শেখ মুজিব বলেন যে, সাম্প্রতিক আন্দোলনে গুলীবর্ষণের ব্যাপারে সরকার যে কেন এখন পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দান করে নাই তাহা তিনি বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছেন না। তিনি বলেন যে, সকল অফিসার এই ব্যাপারে দোষী সাব্যস্ত হইবেন, তাঁহাদের বিরুদ্ধে চরম শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে। তিনি বলেন, সরকার যদি এই ব্যাপারে তদন্তের কোন ব্যবস্থা না করেন তবে “আমরা তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য অবসরপ্রাপ্ত জজদের প্রতি আবেদন জানাইব।” শেখ মুজিব গুলীবর্ষণে নিহত ও আহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দান এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনকে কেন্দ্র করিয়া দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।

সুত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু: পঞ্চম খণ্ড ॥ ষাটের দশক ॥ চতুর্থ পর্ব ॥ ১৯৬৯