দৈনিক ইত্তেফাক
২৪শে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
ভাসানী ও শেখ সকাশে ভুট্টো
জনাব জেড, এ ভুট্টো গতকল্য (রবিবার) রাত্রে ঢাকায় বলেন যে, তিনি ৬- দফা আওয়ামী লীগ ও ভাসানীপন্থী ন্যাপের মধ্যকার ব্যবধান দূর করিবার চেষ্টা করিতেছেন। কিন্তু তিনি এই ব্যবধানের বিষয়বস্তু প্রকাশ করিতে অস্বীকার করেন।
মওলানা ভাসানীর সহিত ৪৫ মিনিটকাল আলোচনা শেষে সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে, এখান হইতে সরাসরি তিনি শেখ মুজিবর রহমানের নিকট যাইতেছেন। মওলানা সাহেবের নিকট হইতে শেখ মুজিবের নিকট কোন বার্তা লইয়া যাইতেছেন কিনা, জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি না- সূচক উত্তর প্রদান করেন।
প্রেসিডেন্ট আইয়ুব কর্তৃক আহূত গোলটেবিল বৈঠকে যোগদানের ব্যাপারেই মত পার্থক্য সৃষ্টি হইয়াছে কিনা জিজ্ঞাসা করা হইলে জনাব ভুট্টো সরাসরি উত্তর এড়াইয়া গিয়া বলেন যে, কিভাবে জাতীয় সঙ্কট নিরসন করিতে হইবে সেই প্রশ্নেই এই মতভেদ সৃষ্টি হইয়াছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে মওলানা ভাসানীর মতামত শেখ মুজিবের নিকট ব্যক্ত করিবেন কিনা, জিজ্ঞাসা করা হইলে জনাব ভুট্টো বলেন, তিনি এ-ব্যাপারে সজাগ রহিয়াছেন। তিনি আরও বলেন ব্যবধান দূরীভূত করিতে যতটুকু বলা প্রয়োজন তিনি ততটুকু বলিবেন।
প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণ সম্পর্কে তাঁহার পার্টির মনোভাবের কথা জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি বলেন, তিনি একটি যৌথ সিদ্ধান্ত গ্রহণের চেষ্টা করিতেছেন। কিন্তু তাহা সম্ভব না হইলে তাঁহার দল স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবে।
শেখ মুজিবের মুক্তি এবং আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের পর বিরোধী দলগুলির গোলটেবিল বৈঠকে যোগদানের সম্ভাবনার কথা জিজ্ঞাসা করা হইলে তিনি বলেন, শেখ মুজিবের যোগদান নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; কিন্তু তাহাই সব কিছু নয়।
পরে গতকল্য দ্বিতীয়বার শেখ মুজিবের সহিত সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শেখ মুজিবের সহিত তাহার সন্তোষজনক আলোচনা হইয়াছে। তিনি আরও বলেন, আগামীকল্য তিনি শেখ মুজিবের সহিত একযোগে লাহোর যাত্রা করিবেন। তিনি শেখ মুজিবের সহিত আধ ঘণ্টাকাল অতিবাহিত করেন। –এপিপি
সুত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু: পঞ্চম খণ্ড ॥ ষাটের দশক ॥ চতুর্থ পর্ব ॥ ১৯৬৯