দৈনিক ইত্তেফাক
২৪শে ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
একটি আনন্দঘন মুহূর্ত—
সুদীর্ঘ দুই বছর নয় মাস পর পিতাকে বন্দী জীবন হইতে গৃহে ফিরিতে দেখিয়া গতকল্য (শনিবার) শেখ মুজিবর রহমানের জ্যেষ্ঠা কন্যা হাসিনা আনন্দের আতিশয্যে কান্নায় ভাঙ্গিয়া পড়ে। পিতা বন্দী থাকাকালে কিছুদিন আগে তার বিবাহ হয়। বাহির হইতে আগত হাসিনা শিশুর ন্যায় পিতার কোলে ঝাঁপাইয়া পড়ে এবং তাহাকে গভীরভাবে আলিঙ্গনাবদ্ধ করে। সে কথা বলার চেষ্টা করে, কিন্তু উদ্বেলিত কান্নায় তাহার বাকরুদ্ধ হইয়া আসে।
কনিষ্ঠা কন্যা রেহানা ড্রইং রুমে তার এক বান্ধবীর সঙ্গে খেলা করিতেছিল। সে ছুটিয়া আসিয়া ‘আব্বুর’ কোলে ঝাঁপাইয়া পড়ে। আব্বু তাহাকে আদর করিয়া একটি চুমু দেন।
রেহানা বলেঃ “আমিও আব্বুকে চুমু দিয়েছি। জামাল ভাই এসে যখন খবরটি দেয়, তখন সত্যি বিশ্বাসই করতে পারিনি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হাসিনা জানায় যে, রোকেয়া হলের লনে সে যখন পায়চারী করিতেছিল, সে সময় একজন বেয়ারা আসিয়া তাকে আব্বার মুক্তির খবর জানায়। তারপর একজন বান্ধবীও ছুটিয়া আসিয়া তাকে এই খবর দেয় এবং অবিলম্বে বাসায় যেতে বলে। হাসিনা একটি বেবী ট্যাক্সি ভাড়া করিয়া বাসা অভিমুখে রওয়ানা হয়। পথে ড্রাইভার খবরটির সত্যতা সমর্থন করিয়া বলেঃ “আমি শেখ সাহেবের সংগে ‘হ্যাণ্ড শেক’ করেছি।”
সুত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু: পঞ্চম খণ্ড ॥ ষাটের দশক ॥ চতুর্থ পর্ব ॥ ১৯৬৯