আজাদ
১১ই এপ্রিল ১৯৬৮
নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের সভায় রাজবন্দীদের মুক্তি দাবী
নেত্রকোনা, ৯ই এপ্রিল।— সম্প্রতি নেত্রকোনা মহকুমা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পূৰ্ব্ব পাক আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মোক্তার পাড়ার মাঠে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভার পূর্ব্ব পাক আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারী পার্টীর সম্পাদক জনাব আবদুল হাকিম চৌধুরী এম, পি, এ ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব রফিকউদ্দিন ভুইয়া অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
জনাব রফিকউদ্দিন ভুইয়া তাহার বক্তৃতায় বলেন যে, কারাদণ্ডিত হওয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। কাজেই এ ন্যায্য আন্দোলন অব্যাহত রাখার ফলে যদি আওয়ামী লীগারদের আগুনে আত্মাহুতি দিতে হয় তবু আন্দোলন স্তব্ধ হইবে না। তিনি শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আস্থা জ্ঞাপন করিয়া বলেন যে, গণতন্ত্রের প্রতিভূ জনাব হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে পাকিস্তান আইন পরিষদের ভিতরে ও বাহিরে নিয়মতান্ত্রিক বিরোধীদল গঠন করার ব্যাপারে যে সমস্ত নেতা সামনের সারিতে ছিলেন তাহাদের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম প্রথমেই উল্লেখ করা যাইতে পারে। তিনি পূৰ্ব্ব পাকিস্তান-এর বঞ্চনার ইতিহাস বর্ণনা করেন।
সভাপতির ভাষণে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়িয়া তোলার জন্য ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আওয়ামী লীগের ৬-দফা কর্মসূচীর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করেন। শোষণহীন সমাজব্যবস্থা কায়েমই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য বলিয়া তিনি ঘোষণা করেন।
সভায় শেখ মুজিব কোথায়, কি অবস্থায় আছেন তাহা সরকারী প্রেসনোট মারফৎ জনগণকে অবহিত করার জন্য জোর দাবী জানানো হয়। শেখ মুজিবের নেতৃত্বে পূর্ণ আস্থা, ৬-দফার আশু বাস্তবায়ন, আওয়ামী লীগ নেতা জনাব আবদুল মোমেন, তাজউদ্দিন আহম্মদ, খন্দকার মোস্তাক আহম্মদ, শেখ ফজলুল হক ও ছাত্রনেতা মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রেজ্জাক, নুরে আলম সিদ্দিকী, শ্রমিক নেতা আবদুল মান্নানসহ সমস্ত রাজবন্দীর মুক্তি, জরুরী ও দেশরক্ষা আইন বাতেল ইত্যাদি কতিপয় প্রস্তাব গৃহীত হয়। —সংবাদদাতা
সূত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু চতুর্থ খণ্ড: ষাটের দশক ॥ তৃতীয় পৰ্ব ॥ ১৯৬৮