You dont have javascript enabled! Please enable it! বাংলাদেশের সাহায্যে ভারত - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের জন্য

সে এক সময় ছিল বটে। শরণার্থীরা হাজারে হাজারে দেশ ত্যাগ করছেন। সীমান্তবর্তী রাজ্যসমূহে আশ্রয় নিয়েছেন। খাবারদাবার নেই, মাথা গোঁজার ঠাই নেই। অন্যদিকে, মুক্তিযোদ্ধারা সামান্য সম্বল নিয়ে লড়াই করে চলছেন। এর এদিকে সারা ভারত জুড়ে ব্যক্তি, সংগঠন রাজনীতি ভুলে নেমে পড়ছেন বাঙালি শরণার্থী আর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে। সারা ভারত জুড়ে দীর্ঘ ন’মাস ভারতীয়রা বাঙালিদের জন্য দ্বারে দ্বারে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন। আমাদের প্রজন্মের অনেকেই আজ তা ভুলে গেছেন। বর্তমান প্রজন্ম এর খোঁজ খবর রাখেন কিনা সন্দেহ। এ ধরনের সাহায্য সহায়তা নিয়ে কোনো বড় ধরনের গবেষণা আজো হয়নি।
এ ধরনের সাহায্য সহায়তার কথা পত্র-পত্রিকায় ছাপা হতো। কখনও হতো না। আমি এখানে কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক কালান্তর থেকে এ ধরনের সাহায্য সহায়তার কিছু সংবাদ তুলে ধরলাম। মুক্তিযুদ্ধ কীভাবে মানুষজনকে আবেগতাড়িত করেছিল তার একটি উদাহরণ দিচ্ছি। চেতলা কৈশাল বিদ্যামন্দিরের প্রাথমিক বিভাগের ছাত্ররা তাদের টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে এপ্রিল মাসে ১৩.৮০ পয়সা জমা দিয়েছিল সিপিআইয়ের কলকাতা জেলা সম্পাদকের কাছে।
১. ‘বাঙলাদেশ”-এর সাহায্যার্থে ঐক্যবদ্ধ স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন গড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব
নয়াদিল্লী, ৩১ মার্চ (ইউ, এন, আই)-‘বাঙলাদেশ’-এর রণাঙ্গনে আহতদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে দিল্লীর সকল জাতি ধর্ম নির্বিশেষে একটি ঐক্যবদ্ধ স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী আজ এক প্রস্তাব দিয়েছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন বাঙালি সাংস্কৃতিক সংস্থা সমূহের পক্ষ থেকে ড. ত্রিগুণা সেনের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল ‘বাঙলাদেশ-কে সহায়তা দানের অনুরোধ নিয়ে শ্রীমতী গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি ঐ প্রস্তাব দেন।
তিনি ঐ প্রতিনিধিদলকে আরও বলেন, রক্ত সংগ্রহের জন্য কোনো একটি ‘ব্লাড ব্যাঙ্ক’-এর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে রক্তদানেচ্ছু ব্যক্তিদের একটি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে যাতে ঐ রক্ত অনতিবিলম্বে রেড-ক্রশের হাতে পৌছানো যায়।
১.৪.১৯৭১

২. ওষুধ কারখানাগুলো এক দিনের উৎপাদন এবং শ্রমিকরা একদিনের মজুরি দিন বাঙলাদেশের জন্য ডাঙ্গের আবেদন
নয়াদিল্লী, ৩১ মার্চ (ইউ, এন, আই)-সারা ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক শ্রী এস এ ডাঙ্গে আজ দেশের সমস্ত ওষুধের কারখানার প্রত্যেক শ্রমিক, প্রতিটি ইউনিয়ন এবং সকল ওষুধ প্রস্তুত কারককে তাঁদের একদিনের মজুরি ও একদিনের উৎপাদন বাংলাদেশের আহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দান করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রেডক্রশ এবং অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সাহায্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পাঠানোর সুযোগ করে দেওয়া ও যাতে এই সাহায্য আক্রমণকারী পাক বাহিনীর হাতে না পড়ে তা দেখার জন্য শ্রীডাঙ্গে তাঁর বিবৃতিতে ভারত সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
“বাংলাদেশের” নিকটতম প্রতিবেশী হিসাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সক্রিয় সাহায্য দানের ব্যাপারে পশ্চিমবাংলার জনসাধারণের বিশেষ ভূমিকা আছে বলে শ্রীডাঙ্গে মন্তব্য করেন।
১.৪.১৯৭১

৩. বাঙলাদেশ মুক্তি-সংগ্রাম সহায়ক সমিতি
“বাঙলাদেশের” মুক্তি সংগ্রামকে সর্বতোভাবে সাহায্য করার জন্য এই রাজ্যে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সংগঠন “বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম সহায়ক সমিতি”—গঠিত হয়েছে।
এই সংগঠনের প্রধান কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন:
সভাপতি—শ্রীঅজয় কুমার মুখোপাধ্যায়, মুখোপাধ্যায়,
কার্যকরী সভাপতি— শ্রীবিজয়সিং নাহার, সম্পাদকগণ-অধ্যাপক অমিত দাশগুপ্ত, অধ্যাপক নির্মল বসু ও ডাঃ জয়নাল আবেদীন।
পিএসপি নেতা শ্রীসমর গুহ ও মুসলিম লীগের একজন নেতা সহ-সভাপতি এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ কমিটির সভ্য আছেন।
সর্ব সাধারণকে এই সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে।
৩.৪.১৯৭১

৪. বাঙলাদেশের সাহায্যে সপ্তাহব্যাপী সংগ্রহ অভিযান
মেদিনীপুর, ২ এপ্রিল (নিজস্ব)-বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাহায্যার্থে জেলা কমিউনিস্ট পার্টি কৃষক সমিতি ও এ-আই-টি-ইউ-সি’র স্থানীয় নেতৃত্ব অর্থ ও সাহায্য সামগ্রী সংগ্রহের কর্মসূচি নিয়েছেন। সংগ্রহ অভিযান এক সপ্তাহকালব্যাপী চলবে।
কমিউনিস্ট পার্টির মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক শ্রীকামাক্ষী ঘোষ, জেলা কৃষক সমিতির সভাপতি শ্রীদেবেন দাস এবং এ আই টি ইউ-সি’র জেলা নেতা শ্রীনারায়ণ চৌবে সংগ্রহ অভিযানকে সফল করার আবেদন জানিয়ে এক যুক্ত বিবৃতি দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট শাখা, আঞ্চলিক ও থানা কমিটিগুলোকে সংগ্রহ অভিযান সংগঠিত করতে এবং জনসাধারণকে মুক্ত হস্তে অর্থ, ঔষধপত্র ইত্যাদি সাহায্য দিতে বিবৃতিতে আবেদন জানানো হয়েছে।
৩.৪.১৯৭১

৫. লেনিন সরণীতে রক্তদান কেন্দ্র (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ২ এপ্রিল—বাঙলাদেশের মুক্তিফৌজকে সাহায্যার্থে ৬৭ নং লেনিন সরণীতে (আই এম এ হলে) রক্তদান কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আজ আই এম এ-র সভ্যরা প্রথম কিস্তিতে রক্তদান করেছেন।
৩.৪.১৯৭১

৬. আই-এম-এ’র আবেদন
“বাঙলাদেশের” লক্ষ লক্ষ আহত ও রুগ্ন মানুষের চিকিৎসা ও সেবাকার্যের জন্য এবং সেখানে মহামারী নিরোধের ব্যাপারে আই-এম-এ গোড়া থেকেই আত্মনিয়োগ করেছে। এ বিষয়ে অবিলম্বে প্রয়োজন হয়ে পড়েছে-
স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক (বিশেষ করে সার্জারি ও অ্যানেসথেসিয়া দেবার ট্রেনিংপ্রাপ্ত ব্যক্তি। এমার্জেন্সি সার্জারির যন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জাম, আনুষঙ্গিক ঔষধপত্র যথা অ্যান্টিবায়োটিক, সালফা ড্রাগ, এ-টি-এস ও টক্সয়েড, সেলাইন, গ্লুকোজ, ঈথার (অ্যানেসথেটিক), ড্রেক্সটান, ব্যান্ডেজ, তুলা, গজ, প্লাস্টার প্রভৃতি। মিল্ক পাউডার, বেবিফুড, টিনফুড, বিস্কুট, বিড়ি, সিগারেট, দেশলাই, টর্চ, ব্যাটারি প্রভৃতি; রক্ত (প্রতিদিন আই-এম-এ অফিসে বেলা ২টা হইতে ৬টা পর্যন্ত রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে): পর্যাপ্ত অর্থ।
এই উদ্দেশ্যে আই-এম-এ সমস্ত চিকিৎসক, ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের কাছে যথাসাধ্য সহায়তা ও যোগাযোগের জন্য অবিলম্বে আবেদন জানাচ্ছে। যোগাযোগের ঠিকানা—
আই এম এ অফিস,
৬৭, লেনিন সরণী (ধর্মতলা স্ট্রীট), কলকাতা-১৩
ফোন নং: ২৪-৭৫৮৫
৮.৪.১৯৭১

৭. বাঙলাদেশের সংগ্রামের সমর্থনে রক্তদান
বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশনের প্রাদেশিক দপ্তরে ১২ এপ্রিল বেলা ১২ টা থেকে রক্ত নেওয়া হবে।
সম্পাদকমণ্ডলী
বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশন

৮. বাঙলাদেশের সমর্থনে সভা-মিছিল ও অর্থদান
কলকাতা ৯ এপ্রিল— মেদিনীপুর থেকে প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায় যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী সমিতির মেদেনীপুর জেলা অস্থায়ী যুক্ত কমিটির উদ্যোগে গত ৭ এপ্রিল বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে এক মিছিল বের করা হয়। মিছিলের পর এক সভা থেকে গৃহীত প্রস্তাবে ইয়াহিয়া সরকার কর্তৃক গণহত্যার তীব্র নিন্দা করা হয় এবং বাংলাদেশের মুক্তি-সংগ্রামীদের রক্ত, অর্থ প্রভৃতি সাহায্যের আবেদন করা হয়।

কোচবিহার
বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনসাধারণের সমর্থনে কোচবিহারের লেখক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি এক আবেদন প্রচার করা হয়েছে। আবেদনে ভারত সরকারের কাছে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকৃতি দানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
গত ৫ এপ্রিল বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনসাধারণের সাহায্যের জন্ম তুফানগঞ্জে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে একটি কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শ্রীঅমিয় ভূষণ মজুমদার। একই উদ্দেশ্যে কোচবিহার শহরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, গণসংগঠন ও ক্লাবের সহযোগিতায় এক নাগরিক কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি রিলিফ কাজ সংগঠন শুরু করেছেন।

শ্রীরামপুরে
স্থানীয় কিমারবক্স ম্যানুফ্যাকচারিং শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যবৃন্দ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যোদ্ধাদের সাহায্যার্থে তাঁদের এক দিনের বেতন দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শ্রমিক-কর্মচারীরা আগামী রবিবার ১১ এপ্রিল একদিন অতিরিক্ত শ্রম দান করে ঐ বেতন দেবেন। শ্রমিক-ইউনিয়ন এক সভা থেকে অবিলম্বে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ভারত সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।

বি এম পি এ ই, এর বর্ধমান শাখা
গত ৫ এপ্রিল বেঙ্গল মোশন পিকচার এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের বর্ধমান শাখার এক সাধারণ সভায় বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে ইউনিয়নের সদস্য ও কর্মীরা একদিনের বেতন দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের মবিভিন্ন স্থানের সিনেমা কর্মীরা যাতে অনুরূপ সিদ্ধান্ত নেন সভা থেকে এই আবেদনও করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ সাব অর্ডিনেট এগ্রিকালচারাল সার্ভিস ক্লাস ১ অ্যাসোসিয়েশনের গত ৪ এপ্রিলের সভা থেকেও অনুরূপ একদিনের বেতন দানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে পাকি-সামরিক বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের জনগণের উপর বর্বরোচিত হত্যালীলা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানান হয়েছে এবং বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারকে স্বীকৃতি দানের জন্য ভারত সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

বাঙলাদেশের সমর্থনে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাগ্রো: বিবৃতি
(স্টাফ রিপোর্টার)

কলকাতা, ৯ই এপ্রিল— প. ব. রাজ্যবিদ্যুৎ পর্ষদ ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শ্রী দিলীপ নন্দী আজ এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনসাধারণের উপর আধুনিক মারণাস্ত্রে সজ্জিত পাক-সামরিক প্রশাসনের বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বাংলার সংগ্রামী জনগণকে পূর্ণ নৈতিক সমর্থন জানিয়ে মিলিটারি কর্তৃক পোড়ামাটি নীতির দ্বারা শিল্প, বাণিজ্য ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ধ্বংস করার নিন্দা করেন। ভারত সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে পর্ষদের ইঞ্জিনিয়াররা বাংলার মানুষের সহায়তায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনের কাজে ইচ্ছুক বলে উক্ত বিবৃতিতে শ্রীনন্দী জানান।
১০.৪.১৯৭১

৯. বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সমর্থনে রাজ্যব্যাপী আজ অর্থ সংগ্রহ সকাল: ৮টায় শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড় ও একডালিয়া পার্ক (বালীগঞ্জ) থেকে দুটি সংগ্রহ অভিযান মিছিল
সংগ্রহ মিছিলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, উপ-মুখ্যমন্ত্রী তৎসহ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
বিকাল: ৫ ঘটিকায় শহীদ মিনারে জনসভা।
সভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সভাপতিত্ব করবেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ভাষণ দেবেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ঐ সভায় প্রধান অতিথিরূপে উপস্থিত থাকবেন।
১১.৪.১৯৭১

১০. ‘বাঙলাদেশে’র দুর্গতদের সাহাযার্থে পূর্ণিয়া জেলা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এক লক্ষ টাকা সংগ্রহ
পূর্ণিয়া, ১০ এপ্রিল (ইউ এন আই)-‘বাংলাদেশের দুর্গতদের সাহায্যার্থে পূর্ণিয়া জেলা কর্তৃপক্ষ ১ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছেন।
অপরদিকে জেলার জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাঙলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতিদানের দাবি জানিয়েছেন।
১১.৪.১৯৭১

১১. বাঙলাদেশের সাহায্যে মহিলাদের সংগ্রহ অভিযান
মেদিনীপুর শহরে গত ৭ এপ্রিল থেকে শহর মহিলা সমিতি বাংলাদেশের সাহায্যের জন্য বাড়ি বাড়ি অর্থ সংগ্রহ করেছেন।
শ্রীমতি প্রীতি মুখার্জী, কল্যাণী ভট্টাচার্য প্রমুখ এই স্কোয়াড পরিচালনা
করছেন।
১২.৪.১৯৭১

১২. স্টুডেন্টস হেলথ হোমে বাঙলাদেশের জন্য রক্তদান
কলকাতা, ১২ এপ্রিল (সংবাদদাতা)-বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের জন্য স্টুডেন্টস হেলথ হোমে রক্ত গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ প্রাথমিক পর্যায়ে ২০ জন রক্তদান করেন। কেন্দ্রীয় ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত গ্রহণ করে। পর্যায়ক্রমে রক্ত গ্রহণ করা হবে বলে হেলথ হোমের একজন মুখপাত্র জানান।
পরবর্তী সময়ে স্টুডেন্টস হেলথ হোমের উদ্যোগে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, লরেটো কলেজ, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ পলিটেকনিকের রামকৃষ্ণ পলিটেকনিকের ছাত্র-ছাত্রীরা এবং ফিলিপস ইন্ডিয়া লিমিটেড ও জীবন বীমা কর্পোরেশন (মেট্রোপলিটন ব্রাঞ্চ) কর্মীরা এবং হেলপ হোমের কর্মী বন্ধুরা রক্ত দেবেন। কেন্দ্রীয় ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সুযোগসুবিধা অনুযায়ী রক্ত টানা হবে।
বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয় আজ মূলত এন্টালি অঞ্চলের নাগরিকরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রক্ত দিয়ে যান।
১২.৪.১৯৭১

১৩. মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের উদ্দেশ্যে ১৭ এপ্রিল শিক্ষকদের রক্ত দান
(স্টাফ রিপোর্টার)

কলকাতা, ১২ এপ্রিল বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের জন্য রাজ্যের শিক্ষকগণ আগামী ১৭ এপ্রিল রক্তদান করবেন। এ. বি. টি. এ. কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষে সর্বশ্রী বীণা চৌধুরী, দেবপ্রসাদ সরকার ও শ্যামাপদ ঘোষাল এই কথা জানিয়ে আজ এক বিবৃতিতে ১ দিনের বেতন দান করার জন্য রাজ্যের শিক্ষকবৃন্দের কাছে আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তারা আরও জানান যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনগণের উপর জঙ্গীশাহী ইয়াহিয়া নির্লজ্জ বর্বর আক্রমণের নিন্দা ও বাংলাদেশের স্বীকৃতির দাবিতে আগামী ২০ এপ্রিল পাক-ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে রাজ্যের শিক্ষকবৃন্দ বিক্ষোভ জানাবেন।
১৩.৪.১৯৭১

১৪. বাঙলাদেশে মেডিক্যোল রিলিফ পাঠাতে আই এম এ সাহায্য করবে
(স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ১৪ এপ্রিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আই এম এ-র) পক্ষ থেকে আজ এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে সকল সংগঠন ‘বাংলাদেশ” এর মুক্তি যোদ্ধাদের সাহায্যার্থে মেডিক্যাল রিলিফ পাঠাতে চান তাঁরা যেন অবিলম্বে ৬৭ লেলিন সরণীতে আই, এম, এ কার্যালয়ে (ফোন ২৪-৭৫৮৫) যোগাযোগ করে যথার্থ রিলিফদানের ব্যবস্থা সম্ভব করে তোলেন।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, “বাংলাদেশ”-দরদীদের আমরা সবিনয়ে জানাতে চাই যে, যুদ্ধক্ষেত্রে মেডিক্যাল রিলিফ প্রেরণের কৌশল ভিন্নতর। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। সুতরাং সংগৃহীত অর্থ ও রিলিফ সামগ্রীর যাতে অপচয় না হয় সেদিকে নজর রাখা উচিত। আই এম এ মেডিক্যাল রিলিফের সাধ্যমত দায়িত্ব নিয়েছে। এই কাজের সমন্বয় করা অত্যন্ত জরুরি।”
এই এম, এ-র বেঙ্গল মেডিক্যাল রিলিফ কমিটি বর্তমানে ছয়টি মেডিক্যাল স্কোয়াড সীমান্তপারে পাঠিয়েছে। স্থানীয় মুক্তিফৌজের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্কোয়াডগুলো মুক্তিফৌজের নির্দেশ মতো ফাস্ট-এইড কেন্দ্ৰ খুলছে। চিকিৎসার সরঞ্জাম ও ঔষধাদি দিয়ে এসেছে। প্রয়োজনানুযায়ী সরবরাহ চালাচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকদের ফার্স্টএইড ও মহামারী-বিরোধী ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। তাছাড়া একটি সুসজ্জিত সার্জিক্যাল টিম বনগাঁ সীমান্তের ওপারে নাভারণের হাসপাতালে কয়েকদিন আহতদের চিকিৎসা করে কিছু সংখ্যক গুরুতর আহতকে এপারে আনতে পেরেছে। অনুরূপ একটি টিম কুষ্টিয়ায় কাজ করছে। মুক্তিফৌজ মারফৎ ওপারে দিনাজপুর, মালদহ সীমান্তে, রাজশাহী ও সাতক্ষীরা অঞ্চলেও মেডিক্যাল রিলিফের কাজ চলছে।
ইতোমধ্যে আই এম এ, র রিলিফ তহবিল প্রায় নিঃশেষিত হওয়ার ফলে এবং আহতদের চিকিৎসার্থে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের মূল্য অত্যন্ত মহার্ঘ হওয়ার দরুণ আই এম এ বিশেষ সমস্যাগ্রস্ত। একটি সার্জিক্যাল টিম সজ্জিত করতে ৮-১০ হাজার টাকা প্রয়োজন; একটি ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স’-এর মূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা। আই এম এ-র পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই সকল সমস্যার কথা জানানো হয়েছে; সীমান্ত বরাবর আমাদের মহকুমা হাসপাতালগুলোতে অবিলম্বে সার্জিক্যাল কিট দিয়ে যন্ত্রপাতি, ব্লাডব্যাঙ্ক অ্যাম্বুলেন্স, ইত্যাদি সহ সুসজ্জিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, ডাক্তারদের ছুটি ও ডেপুটেশনের ব্যবস্থা করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
১৫.৪.১৯৭১

১৫. কানপুরে শ্রমিকদের বাংলাদেশের সংগ্রামে একদিনের বেতন দান
কানপুর, ১৪ এপ্রিল (ইউ এন) বাংলাদেশের সংগ্রামে সংহতি প্রকাশ করে কানপুরের প্রতিরক্ষা কারখানাসমূহ, মজদুর সভা ও টেক্সটাইল কর্মচারীরা একটি পৃথক সভায় মিলিত হয়ে বাংলাদেশের সংগ্রামের প্রতি তাঁদের সংহতি জানিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, তারা তাঁদের একদিনের বেতন বাংলাদেশের সংগ্রামে দান করবেন।
১৫.৪.১৯৭১

১৬. মুক্তিযুদ্ধের সাহাযার্থে বারাসাত গণসংগ্রহ (নিজস্ব সংবাদদাতা)
বারাসাত, ১৬ এপ্রিল “বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির বারাসত শাখার” উদ্যোগে গতকাল ১ বৈশাখ সকাল থেকে একবেলা ক্ষুদ্র সংগ্রহ অভিযান পরিচালিত হয়। শতাধিক মহিলা ও পুরুষ স্বদেশী সঙ্গীত গাইতে গাইতে হরিতলা মোড় থেকে বেরিয়ে স্টেশন, চাপাডালি শেটপুকুর, কলোনি মোড় এবং নবপল্লী এলাকা পরিভ্রমণ করেন। সামান্য দান সংগ্রহ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রচার করা ছিল এই দিনটির আসল উদ্দেশ্য। বারাসাতের মানুষ যে এই অভিযানে বিপুলভাবে সাড়া দিয়েছেন তার প্রমাণ ঐ এক বেলা সংগৃহীত ১৩৪,৮০ পয়সা। পরবর্তী কর্মসূচি অধিক দান সংগ্রহ।
১৭.৪.১৯৭১

১৭. বাঙলাদেশের জন্য দুর্গাপুরে যুবকদের রক্তদান (নিজস্ব সংবাদদাতা)
দুর্গাপুর, ১৯ এপ্রিল গতকাল ও আজ এই দু’দিনে দুর্গাপুর ‘বাংলাদেশ যুব সহায়ক সমিতি’র উদ্যোগে ৯৬ জন যুবক রক্তদান করেন। গতকাল এম, এ, এস সি ও আজ ইস্পাত নগরীতে কেন্দ্রীয় ব্লাড ব্যাঙ্কের ৬ জন কর্মী রক্ত সংগ্রহ করেন।
রক্তদানকারীদের মধ্যে যুবসঙ্ঘের ৯০ জন ও যুব কংগ্রেসের ৬ জন যুবক আছেন। যুব সহায়ক সমিতির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে রক্ত দানের যুবকদের উৎসাহের জন্য অভিনন্দন জানান হয়েছে।
আগামী ২২ এপ্রিল স্থানীয় কমিউনিটি হলে বাংলাদেশ সহায়ক যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
২০. ৪.১৯৭১

১৮. বাঙলাদেশের জন্য কেরালা সরকারের ১ লক্ষ টাকা মঞ্জুর
ত্রিবান্দ্রাম, ২৪ (ইউ এন আই)-কেরালা সরকার নয়াদিল্লীর বাংলাদেশ সহায়ক দলটিকে ১ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছেন।
২৫.৪.১৯৭১

১৯. বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামীদের জন্য সাহায্য
হায়দারাবাদ, ২৫ এপ্রিল (ইউ-এন-আই)- তেলেণ্ড ছায়াচিত্র দৃশ্বকর বুলদউ-এর প্রযোজক ও পরিবেশক এবং প্রদর্শকরা বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামীদের জন্য দশ হাজার টাকা সাহায্য দান করেছেন।
আজ একটি অনুষ্ঠানে উক্ত টাকার একটি চেক কংগ্রেস সভাপতি শ্রী ডি সঞ্জীবায়ার হাতে অর্পণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীবেঙ্কটেশ্বর ও ওসমানিয়া কলেজের দরিদ্র ছাত্রদের জন্য ১৫ হাজার করে টাকা দান করার কথা ঘোষণা করেন।
২৬.৪.১৯৭১

২০. শিশু ছাত্রদের দান
পাকিস্তানের জঙ্গীশাসক ইয়াহিয়া খাঁর বর্বরোচিত অত্যাচারের বিরুদ্ধে ও বাঙলার মুক্তি-সংগ্রামে সাহায্যের জন্য চেতলা কৈশাল বিদ্যামন্দিরের প্রাথমিক বিভাগের ছাত্ররা তাদের জল-খাবারের পয়সা বাঁচিয়ে ১৩.৮০ পয়সা জমা করে। সেই সংগৃহীত অর্থ গতকাল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির কলকাতা জেলা সম্পাদক শ্রীঅজয় দাশগুপ্তের হাতে অর্পণ করা হয়।
২৯.৪.১৯৭১

২১. ফোর্ট উইলিয়ামের শ্রমিকদের বেতনদানের সিদ্ধান্ত
কোন্নগরের ফোর্ট উইলিয়াম কোম্পানি লিমিটেডের (স্টিল ওয়্যার অ্যাণ্ড রোপ ডিভিশন) শ্রমিক কর্মচারী ও অফিসাররা ২ মে কাজ করে একদিনের পুরো বেতন বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামীদের সাহায্যার্থে দান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কারখানার ইউনিয়নের এক সভা থেকে ঐ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় বাংলাদেশের মুক্তি-সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানিয়ে একটি প্রস্তাবও গৃহীত হয়েছে।
২৯.৪.১৯৭১

২২. ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যে পার্ক সার্কাস অঞ্চলে গণ-সংগ্রহ স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ১৮ এপ্রিল পার্ক সার্কাস অঞ্চলের শিল্পী, সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আজ সকালে স্বাধীন ‘বাঙলাদেশ’ এর মুক্তিসংগ্রামের সমর্থনে এলাকার বিভিন্ন পথ পরিক্রম করে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে গণসংগ্রহ করেছেন।
এই গণসংগ্রহ মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন ড. এ.এম. ও গণি, সর্বশ্রী শম্ভু মিত্র, শচীন্দ্র ধর, শ্যামলাল ঘোষাল, নীহার গুহ, কানাই পাকড়াশী, প্রমুখ। গণসংগ্রহের সময় অঞ্চলের জনগণের মধ্যে বিশেষ সাড়া পরিলক্ষিত হয়। সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ গণনা এখনও চলছে। অধিক রাত্রে জানা গেল, এ পর্যন্ত মোট ১,৬০০ টাকা সংগ্রহীত হয়েছে।
এই গণসংগ্রহ পরিচালিত হয় পার্কসার্কাস অঞ্চলে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, গণসংগঠন, শিল্পী-সাহিত্যিক, বিচারপতি ও বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে গঠিত ‘বাঙলাদেশ’ মুক্তিসংগ্রাম সহায়ক সমিতি’র আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে। এই আঞ্চলিক শাখার সভাপতি ডা. এ.এম. ও গণি এবং যুগ্মসম্পাদক সৰ্বশ্ৰী শচীন্দ্র ধর ও শ্যামলাল ঘোষাল।

২৩. জামসেদপুরবাসীদের ৭০ হাজার টাকা দান
ইস্পাত নগরী জামসেদপুরের নাগরিকরা ভারতীয় রেডক্রস সোসাইটির বিহার শাখা মারফৎ বাংলাদেশ সাহায্য তহবিল ৭০ হাজার টাকা দান করেছেন।

২৪. ‘হিন্দু’ পত্রিকার ১০ হাজার টাকা দান
মাদ্রাজের ইংরেজী দৈনিক ‘হিন্দু’ বাংলাদেশ সাহায্য কমিটিকে দশ হাজার টাকা দান করেছেন। কমিটি ওড়িশার একটি কাপড় কলের কাছ থেকে দশ হাজার শাড়ি পেয়েছেন।

২৫. বাঙলাদেশ সহায়ক মহিলা কমিটির পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে আবেদন (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ১৯ এপ্রিল নয়াদিল্লীতে বিভিন্ন সর্বভারতীয় মহিলা সংগঠনসমূহের উদ্যোগে সদ্য গঠিত ‘বাঙলাদেশ সহায়ক মহিলা কমিটি’ (উইমেন্স কমিটি ফর এইড টু বাঙলাদেশ)-এর একটি আবেদন আমাদের হাতে পৌঁছেছে।
এই আবেদনপত্রে বলা হয়েছে— “মানবতার নামে আমরা সকল সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের কাছে আবেদন জানাচ্ছি- ‘বাঙলাদেশ’-এর জনগণের বাঁচা ও মুক্তির বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে তাঁদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসুন।”
অর্থ এবং বিভিন্ন প্রকার খাদ্য যথা চা, বিস্কুট, গুড়া দুধ এবং নতুন বস্ত্ৰ সংগ্রহ করে ঐ কমিটির প্রধান কার্যালয়ে (৬, ভগবানদাস রোড, নয়াদিল্লী-১) কমিটির চেয়ারম্যান শ্রীমতী লক্ষ্মী রঘুবাসাইয়ার কাছে প্রেরণ করার জন্য আবেদনপত্রে আহ্বান জানান হয়েছে।
ঐ কমিটির অন্যান্য কর্মকর্ত্রীবৃন্দের মধ্যে আছেন শ্রীমতী লাল দামোদরণ মেনন (সম্পাদিকা), শ্রীমতী বি তারাবাঈ, (কোষাধ্যক্ষ), শ্রীমতী বাণী দাশগুপ্ত ও শ্রীমতী নির্মল ভাটগার (যুগ্ম সম্পাদিকা)।…
২১.৪.১৯৭১

২৬. স্যার নৃপেন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের দান
টালিগঞ্জ অঞ্চলের স্যার নৃপেন্দ্র নাথ উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীগণ তাঁদের একদিনের বেতন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন।
এই উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় বাংলাদেশ মুক্তিসংগ্রাম সহায়ক সমিতির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অমিত দাশগুপ্তর হাতে ৫০১ টাকা দেওয়া হয়। সভায় বিভিন্ন বক্তা বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের প্রতি তাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থন জানান।
স্টাফ কাউন্সিলের জরুরি অধিবেশনে, পাকি জঙ্গী সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত ও নৃশংস আক্রমণের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানান হয়। অবিলম্বে বাংলাদেশকে রাজনৈতিক স্বীকৃতিদানের জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ করা হয়।
২১.৪.১৯৭১

২৭. যুব সংঘের বারাসাত শাখার সাহায্য সংগ্রহ
কলকাতা, ২২ এপ্রিল (নিজস্ব)-বারাসাত পৌরাঞ্চল যুব সংঘ গত ১৮ এপ্রিল ৫০০ টাকা মূল্যের শুকনো খাদ্য সংগ্রহ করে বনগাঁ সীমান্তে ‘বাংলাদেশ”-এর মুক্তিফৌজদের সাহায্যার্থে দিয়ে আসেন।
ইতিপূর্বে যুবসংঘ আরো এক কিস্তিতে মুক্তিফৌজদের সাহায্য সামগ্রী দিয়ে এসেছিলেন।
২৩.৪.১৯৭১

২৮. বাঙলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহাযার্থে শ্রমিকদের দান
কলকাতা, ২৩ এপ্রিল (সংবাদদাতা)-সম্প্রতি কাশীপুর গান এণ্ড শেল ফ্যাক্টরি মজদুর ইউনিয়ন, কর্মচারী ইউনিয়ন সহ সমস্ত ইউনিয়ন ও অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা এক সভায় মিলিত হয়ে বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামীদের সাহাযার্থে ১ দিনের বেতন দানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
গৃহীত এক প্রস্তাবে অবিলম্বে বাঙলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতির দাবি ভারত সরকারের কাছে জানানো হয়।
২৪.৪.১৯৭১

২৯. বাঙলাদেশের জন্য অস্ট্রেলিয়ার ইউসটিস থেকে ৪০ হাজার ডলার সাহায্য (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের কলকাতা মিশন অফিস থেকে জানান হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার ইউসটিস নামক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে ৪০ হাজার ডলার সাহায্য দেবার সিদ্ধান্ত করেছেন।
ঐ দিনের অপর এক সংবাদে প্রকাশ, ডা. মজুমদারের নেতৃত্বে লণ্ডনে “বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন” নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়া হয়েছে। প্রায় ছ’শ বাঙালি ডাক্তার এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এই প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই দুই হাজার পাউণ্ড অর্থ সংগ্রহ করেছেন এবং তাঁরা বহু ঔষধ পত্রও পাঠাবেন।
২৬.৪.১৯৭১

৩০. বাঙলাদেশ সংগ্রাম তহবিলে বৰ্দ্ধমানের সরকারি কর্মীদের দান
বর্ধমান, ১৩ মে (সংবাদদাতা)-বর্ধমান থেকে আমাদের সংবাদদাতা জানাচ্ছেন যে, বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে সাহায্যের জন্য বর্ধমান জেলা সাবর্ডিনেট ফুড অ্যান্ড সাপ্লাই বিভাগের কর্মীগণ প্রায় সহস্রাধিক টাকা চাঁদা সংগ্রহ করেছেন। আরও সংগ্রহ চলছে। এই টাকা মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য তহবিলে দেওয়া হবে।
১৫.৫.১৯৭১

৩১. মহারাষ্ট্র বাঙলাদেশ সহায়ক কমিটির দান
নয়াদিল্লী, ৩০ মে (ইউ এন আই)-মহারাষ্ট্র বাঙলাদেশ সহায়ক কমিটি পূর্ববাঙলা থেকে আগত শরণার্থীদের সাহায্যের জন্য দু’টি অ্যাম্বুলেন্স আগামীকাল বোম্বাই থেকে রাজধানীতে আসছে। কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটির চেয়ারম্যান শ্রীমতী পদ্মজা নাইডু অ্যাম্বুলেন্স দু’টি গ্রহণ করবেন।
১.৬.১৯৭১

৩২. বাঙলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ডি ভি সি অপারেশন স্পোর্টস কমিটির ১০১ টাকা দান (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ৩ জুন বিলম্বে প্রাপ্ত এক সংবাদে জানা যায় যে ডি ভি সি অপারেশন স্পোর্টস কমিটি (দুর্গাপুর) বাঙলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যার্থে ২৮ মে বাঙলাদেশ সহায়ক কমিটির কাছে ১০১ টাকা দান করেন।
স্পোর্টস কমিটির পক্ষ থেকে উক্ত টাকা দেন সর্বশ্রী অমিত ভট্টাচার্য ও গোবিন্দ ভট্টাচার্য !
৩.৬.১৯৭১

৩৩. সাহায্যার্থে সিকিম ও নেপাল সরকারের দান
নয়াদিল্লী, ৪ জুন (ইউ এন আই)- সিকিম সরকার বাঙলাদেশের শরণার্থীদের সাহায্যার্থে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৩ লক্ষ টাকা সাহায্য করেছেন।
৩ লক্ষ টাকার চেকসহ প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে লিখিত এক পত্রে শ্রীছোগিয়াল মানবাত্মার লাঞ্ছনার প্রতি তাঁর সংহতি জ্ঞাপন করেছেন। শরণার্থী ত্রাণ ব্যবস্থায় সরকার ও ভারতীয় জনসাধারণের প্রশংসনীয় ভূমিকার প্রতিও তিনি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
নেপাল সরকারের সাহায্য
কাঠমান্ডু থেকে নেপাল সরকার বাঙলাদেশের শরণার্থীদের সাহায্যের জন্য ২৫ হাজার টাকা দান করেছেন।
৫.৬.১৯৭১

৩৪. ত্রাণ তহবিলে অর্থ দান
গড়বেতা, ৪ জুন (নিজস্ব) গড়বেতা থানা, বাঙলাদেশ সংগ্রাম সহায়ক সমিতি ত্রাণ তহবিলে ১৪০০ টাকা জমা দিয়েছেন।
সমিতির সভাপতি শ্রীসরোজ রায় এবং কমিটির সভ্য সর্বশ্রী হীরেন শুকুল ও প্রশান্ত দে গত ২ জুন মহাকরণে এসে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীঅজয় কুমার মুখার্জীর হাতে ১৪০০ টাকার একটি চেক দেন।
৫.৬.১৯৭১

৩৫. মেয়রের আবেদন (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ৯ জুন বাঙলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদের চিকিৎসার জন্য কলকাতা পৌরসভা কয়েকটি কেন্দ্র খুলবে।
এই কাজে সহায়তা করার জন্য “মেয়রের ত্রাণ তহবিলে” মুক্তহাতে দান করতে সকল নাগরিক বিশেষভাবে ব্যবসায়ীদের কাছে মেয়র শ্রীশ্যামসুন্দর গুপ্ত আবেদন করেছেন।
১০.৬.১৯৭১

৩৬. মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তহস্তে সাহায্য দান জনগণের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ১৪ জুন মুলত বাঙলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্ভাব্য সর্বপ্রকার সাহায্যদানের উদ্দেশ্যে গঠিত ‘বাঙলাদেশ মুক্তিসংগ্রাম সহায়ক সমিতি’ মুক্তহস্তে অর্থ ও বস্তুসামগ্রী দান করার জন্য আজ সমিতির পক্ষে সভাপতি মুখ্যমন্ত্রী শ্রীঅজয় মুখোপাধ্যায় নতুন করে এক আবেদন জানিয়েছেন। সমিতির পক্ষ থেকে দেশব্যাপী ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া অর্থ সাহায্য গ্রহণ করছেন।
এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, এ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যের আবেদনে সাড়া বেশ ভালো। জনগণের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মোট ৪ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা সমিতির তহবিলে সংগৃহীত হয়েছে। এছাড়া সমিতিকে রাজ্য সরকার দিয়েছে ৮ লক্ষ টাকা। তাছাড়া আরও ১০ লক্ষ টাকা খুব শীঘ্রই রাজ্য সরকারের সমিতির ভাণ্ডারে তুলে দেবে।
সমিতির অন্যতম নেতৃস্থানীয় সদস্য অধ্যাপিকা ইলা মিত্র জানান, শরণার্থীদের সাহায্যে অপরাপর রাজ্য সরকারগুলি বিশেষভাবে এগিয়ে আসছে না। তার একটি প্রমাণ মুক্তিসংগ্রাম সহায়ক সমিতিতে একমাত্র উড়িশা সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া আর কোনো রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় সাহায্য দেয়নি। উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী ৪০ হাজার টাকা প্রদান করেছেন।
সমিতির অন্যতম সম্পাদক অধ্যাপক নির্মল বসু জানান, বাঙলাদেশের সংগ্রামের পটভূমিকায় পশ্চিমবঙ্গ ও বাঙলাদেশের বিভিন্নস্থানে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধিতে সমিতি বিশেষ উদ্বিগ্ন। এর বিরুদ্ধে সমিতি ইতোমধ্যেই ব্যাপক প্রচারকার্য শুরু করেছে বলে তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠান-ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সম্প্রসারণ পরিষদ, উইমেন্স কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙলাদেশ সহায়ক সমিতির কাছ থেকে শাণার্থীদের মধ্যে রিলিফ কার্য চালনার জন্য প্রচুর সহায়তা পাচ্ছে।
১৫.৬.১৯৭১

৩৭. বাঙলাদেশের জন্য গার্ডেনরীচ পৌর শ্রমিক কর্মচারীদের ২৭১ টাকা দান (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ১৪ জুন গার্ডেনরীচ মিউনিসিপ্যাল শ্রমিক-কর্মচারীরা আজ বাঙলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম সহায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অমিয় দাশ গুপ্তের হাতে ২৭১ টাকা দান করেন।
এই উপলক্ষে মিউনিসিপ্যাল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান আবুল মান্নান।
সভায় শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী দীপালী গোস্বামী বাঙলাদেশের মুক্তি আন্দোলনের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করে ভাষণ দেন।
১৫.৬.১৯৭১

৩৮. বাঙলাদেশ সহায়ক কমিটির ৪২ লক্ষাধিক টাকা সংগ্রহ
নয়াদিল্লী, ১৯ জুন (ইউ এন আই)-বাঙলাদেশ সহায়ক কমিটি আজ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৩,৪০,৮০৪ টাকা পেয়েছেন।
কমিটি এ পর্যন্ত ৪২ লক্ষাধিক টাকা সংগ্রহ করেছে।
১৯.৬.১৯৭১

৩৯. সংগ্রামী মুক্তিকামী বাঙলাদেশের জন্য রক্তদান
কলকাতা, ১৮ জুন (সংবাদদাতা) গত ১৩ জুন সকাল ১০ টায় খড়দহ নার্সিং সেন্টারে বাঙলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে রক্তদান করা হয়। রক্তদানের ব্যাপারে এতদঞ্চলে উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।
রক্তদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ২৫ জন যুবক, মহিলা ও ডাক্তার। বারোজন রক্তদান করেন। এই অঞ্চলের লব্ধপ্রতিষ্ঠ চিকিৎসক এবং যুব সংঘের সহ-সভাপতি ডা. শিশির ভট্টাচার্য রক্তদান করেন। সর্বপ্রথম এবং সর্বশেষে রক্ত দেন মহিলা সমিতির শ্রীমতী শঙ্করী ভট্টাচার্য। এছাড়া যাঁরা রক্তদান করেন, তাদের মধ্যে আছেন সর্বশ্রী উমাশঙ্কর মুখার্জি, অরুণ ভট্টাচার্য, কেদার পোল্লো, মণীন্দ্র বসু, পাঁচু কোলে, বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, শঙ্কর নাথ মুখার্জি। রক্তদান অনুষ্ঠানে বহু গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত থেকে বাঙলাদেশের মানুষের প্রতি ভ্রাতৃত্বের শপথ ঘোষণা করেন।
১৯.৬.১৯৭১

৪০. বাঙলাদেশ তহবিলে আমেরিকার এক্সপ্রেস কর্মীদের দান
কলকাতা, ১৪ জুলাই (সংবাদদাতা) ১২ জুলাই আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাঙ্কে বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে একটি সভা হয়। সভায় উক্ত ব্যাঙ্ক কর্মীদের পক্ষ থেকে ৬০১ টাকা ন্যাশনাল রিলিফ অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সমর রায় চৌধুরীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। উল্লেখযোগ্য, ইতোপূর্বে একই সংস্থার পক্ষ থেকে অন্য একটি তহবিলে এক হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়।
ঐ দিনের সভায় শ্রীমণি সান্ন্যালও উপস্থিত ছিলেন। শ্রীসান্ন্যাল এন আর ও’র ২৪ পরগনা, পশ্চিম দিনাজপুর শরণার্থী শিবিরে সেবা কার্যের বিবরণ দেন। ডা. রায়চৌধুরীও বর্বরতার কাহিনি বর্ণনা করেন। আমেরিকান এক্সপ্রেস ব্যাঙ্ক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শ্রীরতন বসু মজুমদারও বক্তৃতা করেন।
১৫.৭.১৯৭১

৪১. বাংলাদেশ মুক্তিসংগ্রামে তহবিলে আসানসোল শ্রমিকদের দান
আসানসোল, ২৬ জুলাই (সংবাদদাতা) ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির বাঙলাদেশ মুক্তি সংগ্রামে সহযোগিতা করার ডাকে সাড়া দিয়ে রানীগঞ্জ কোল বেল্টের শ্রমিকরা কয়েকটি সভায় মিলিত হন এবং মুক্তিসংগ্রাম তহবিলে অকুণ্ঠচিত্তে দান করেন। ১৮ জুলাই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির কোল বেল্ট লোকাল কমিটি ২৯০৯ টাকা ২৭ পয়সা জমা দিয়েছে।
১৮ জুলাই দামোদা কোলিয়ারিতে শ্রী বি এন তেওয়ারির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কয়লাখনি শ্রমিকদের এক সভায় কমিউনিস্ট নেত্রী শ্রীমতী রেণু চক্রবর্তী মুক্তিফৌজের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের কাহিনি বর্ণনা করেন। সভা শেষে শ্রীমতী চক্রবর্তীর হাতে পার্টির রানীগঞ্জ শাখার পক্ষ থেকে ১৯০৯ টাকা ৭৭ পয়সা জমা দেওয়া হয়। একই দিন নিউ ঝেমাহারি খাস কোলিয়ারির শ্রমিকরা ৬০১ টাকা শ্রমতী চক্রবর্তীর হাতে উঠিয়ে দেন। পার্টির ঝেমাহারি শাখা (কোল বেল্ট লোকাল কমিটি)-র মাধ্যমে শ্রমিকরা এই টাকা দেন।
ডিশেরগড় শাখা একই দিন শ্রীকেত নারায়ণ মিশিরের হাতে ৩৯৮ টাকা ৫০ পয়সা জমা দেয়।
২৭.৭.১৯৭১

৪২. দুর্গাপুর যুব সংঘের এম এ এম সি ইউনিটের দান
দুর্গাপুর যুব সংঘের এম এ এম সি ইউনিটের পক্ষ থেকে ৫০১ টাকা বাঙলাদেশ সাহায্য তহবিলে জমা দেওয়া হয়েছে দুর্গাপুরের যুব কর্মীরা একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করেছেন।
আজ এম এ এস সি ইউনিটের পক্ষ থেকে শ্রীগৌরাঙ্গ দাশগুপ্তের হাতে সংগৃহীত ৫০১ টাকা তুলে দেন।
২৭.৭.১৯৭১

৪৩. বাঙলাদেশের সাহায্যকল্পে কেরালায় ১ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে
ত্রিবান্দ্রম, ২৬ জুলাই (ইউ এন) কেরালার মুখ্যমন্ত্রী শ্রীঅচ্যুত মেনন আজ বিধানসভায় বলেন যে, বাঙলাদেশকে সাহায্যদানের উদ্দেশ্যে এই রাজ্য থেকে কোটি টাকা সংগ্রহের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজভবনের ব্যয় সঙ্কোচনের কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্যপাল শ্রীবিশ্বনাথন স্বেচ্ছায় ৫ শত ৫৫ টাকা কম বেতন নিচ্ছেন। আর কয়েকটি পদে লোক নেওয়াও স্থগিত রাখা হয়েছে।
২৭.৭.১৯৭১

৪৪. বাঙলাদেশ মুক্তি সংগ্রামে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দান (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ২৫ সেপ্টেম্বর আজ বিকেলে বাঙলাদেশ মিশন প্রধান জনাব হোসেন আলির হাতে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে মুক্তি সংগ্রামের সাহায্য হিসাবে দেড় হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সুকোমল দাসগুপ্ত জনাব আলির হাতে ঐ চেক দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক শ্রীসুধাংশু পাল ও সম্পাদক শ্রীরমণী পাল।
২৬.৯.১৯৭১

৪৫. ১৩ এপ্রিল ‘বাঙলাদেশ সংহতি দিবস’ মুক্তি সংগ্রামীদের সাহায্যার্থে সর্বভারতীয় মহিলা সংগঠনগুলো গণ সংগ্রহে নামছেন
কলকাতা, ৮ এপ্রিল (নিজস্ব)-আগামী ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালবাগ হত্যাকাণ্ডে দিবসটি ভারতের সর্বত্র ‘বাঙলাদেশ সংহতি দিবস’ হিসাবে পালিত হচ্ছে। ভারতীয় মহিলা ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সর্বভারতীয় মহিলা সংগঠন সম্প্রতি দিল্লীতে অনুষ্ঠিত এক মুক্তসভা থেকে ঐ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাঙলাদেশের মুক্তি সংগ্রামীদের সাহায্যার্থে একটি যুক্ত কমিটিও গঠিত হয়েছে।
কমিটিতে ভারতীয় মহিলা ফেডারেশন, অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স, ন্যাশনাল কাউন্সিল অব উইমেন, ইয়ং উইমেন্স খ্রিশ্চিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার প্রভৃতি সংগঠনগুলো রয়েছে।
শ্রীমতী লীলা দামোদরণ কমিটির আহবায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সংগঠনসমূহের বিভিন্ন শাখাগুলোকে সর্বত্র ‘বাংলাদেশে’র মুক্তি সংগ্রামীদের সাহাযার্থে গণসংগ্রহ অভিযান সংগঠিত করতে বলা হয়েছে।
২৩.১১.১৯৭১

৪৬. বাংলাদেশের জন্য একদিনের বেতনদান শালিমার টার
কলকাতা, ৮ এপ্রিল স্টাফ রিপোর্টার জানাচ্ছেন শালিমার টার প্রোডাক্টস লিমিটেড’-এর কারখানার শ্রমিকরা তাঁদের একদিনের বেতন রণবিধ্বস্ত ‘বাঙলাদেশ’-এর সংগ্রামী জনগণের জন্য দান করেছেন। এই অর্থের পরিমাণ ২,৬০০ টাকা।
ঐ কারখানার মালিকপক্ষও সম পরিমাণ অর্থ ‘বাঙলাদেশ সাহায্য তহবিলে দান করেছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, গতকাল বেনাপোলে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস-এর শিবিরে গিয়ে কারখানার শ্রমিকরা ঔষধাদি দিয়ে এসেছেন। ঔষধাদির পরিমাণ ৫,২০০ টাকা।
মহুয়া
মেদিনীপুর থেকে আমাদের সংবাদদাতা জানাচ্ছে যে, স্থানীয় মহুয়া সিনেমার কর্মচারীরা বাঙলাদেশের জনগণের সংগ্রহের সাহায্যে একদিনের বেতন দিয়েছেন।
২৩.১১.১৯৭১

৪৭. একটি উল্লেখযোগ্য প্রয়াস
হ্যাঁ, ক্যাম্পে যুবকরা খাটছেন। দেখার জিনিস। খাওয়া নাওয়া নেই, অনেকের আবার ঘুম নেই। শরণার্থী সেবার ব্রতে নিজেদের নিয়োগ করেছেন এরা। সল্টলেক, স্বরূপনগর, বনগাঁ প্রভৃতি অঞ্চলে যুবসংঘের কর্মীরা তো ক্যাম্প খুলেই বসে আছেন। কুপাসী এলাকায় শরণার্থী আসা শুরু হলে কমিউনিস্ট কর্মীরাই সবচেয়ে আগে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তখনও সরকারি সাহায্য এসে পৌছায়নি। কর্মীদের অধিকাংশই যুবক ও তরুণ।
সল্টলেক এলাকায় প্রায় দেড়শো যুবসংঘ কর্মী প্রাণপণ খাটছেন। সরকারি সাহায্য আসবার আগে লেগেছেন। পাঁচ দিন রুটি তুলে বেশ কয়েক হাজার শরণার্থীকে এরা খাইয়েছিলেন। শুধু খাবার বন্দোবস্ত করা ছাড়াও ওই ঘরহারা মানুষের স্বাচ্ছন্দের জন্য যুবকরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন।
যুব শ্রমিকরাও শরণার্থী ও নিরাশ্রয় মানুষদের সেবায় শ্রমদান করেছেন এবং ভবিষ্যতে আরো করবেন। ব্রেথওয়েটের ৭ জন শ্রমিক ইসলামপুর শিবিরে গিয়ে একটানা ১৫ দিন শ্রম দিয়েছেন, দুর্গাপুরের শ্রমিকরা মালদহ শহর ক্যাম্পে ২০ দিন একনাগাড়ে কাজ করেছেন। শ্রমিকের শ্রেষ্ঠ সম্পদ শ্রম। বাঙলাদেশের সর্বহারা মানুষদের তহবিলে দান করতে শ্রমিক যুবকরা বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করেন নি।
যুবসংঘের ছেলেরা বনগাঁ, বারাসত, কুপার্স, স্বরূপনগর, করিমপুর, মহম্মদপুর, মালদহ, ইসলামপুর এবং সল্ট লেকের শিবিরগুলোতে বেশ কাজ দিচ্ছেন। পশ্চিম দিনাজপুরের কলকাতা থেকে দুটি দল গিয়েছে ক্যাম্পের কাজের জন্য।
একটা কথা এখানে উল্লেখ করা দরকার, পৃথিবীর ভূগোল বাঙলাদেশ নামক একটি নয়া রাষ্ট্রকে সম্ভাবিত করার জন্য যাঁরা খুন ঢেলেছিল, জীবনবৃত্ত উপড়ে দিয়েছিল তাদের পুরোভাগে ছিল যুবক সমাজ। এখনো যুবকরাই মূলত তাদের দেশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করার জন্য লড়ছেন, মরছেন। সেই যুবক
সাহায্য সহযোগিতায় ভরিয়ে দেবার জন্য পৃথিবীর সব দেশের গণতান্ত্রিক চিন্তা যুবকদের গভীর দায়িত্ব রয়েছে। এ বাঙলার যুবকদের তো বটেই ক্যাম্পে যুব কর্মীদের নিঃস্বার্থ ও অক্লান্ত সেবা আর কষ্ট বরণের প্রয়াসের মধ্যে সেই দায়িত্ববোধের পরিচয় মিলেছে।
১৬.৭.১৯৭১

৪৮. পণ্ডিচেরি বিধানসভা সদস্যদের বাঙলাদেশ ত্রাণ তহবিলে ৫০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত
পণ্ডিচেরি, ১৬ অক্টোবর (ইউ-এন-আই)-পণ্ডিচেরি বিধানসভার সদস্যরা প্রত্যেকে বাঙলাদেশ ত্রাণ তহবিলের জন্য কমপক্ষে ৫০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিধানসভার অধিবেশনে ঐ মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ডি এম কে সদস্য উক্ত প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
১৭.১০.১৯৭১

৪৯. বাঙলাদেশ সরকারকে বাটা মজদুর ইউনিয়নের ৬০ হাজার টাকা দান (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ৩ নভেম্বর বাটা মজদুর ইউনিয়নের সভাপতি শ্রী সুধীর চন্দ্র মুখোটি এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ আজ মুজিবনগরে বাঙলাদেশ সরকারের কার্যকরী সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের হাতে ষাট হাজার টাকা দান করেছেন। বাটার শ্রমিকেরা এই বৎসর মে ডে’র ছুটির দিনে অতিরিক্ত কাজ করে এই টাকা একদিনের বেতন হিসাবে পেয়েছিলেন।
৪.১১.১৯৭১

৫০. বাঙলাদেশ মুক্তিফৌজ ও মুক্তিফৌজ-এর পরিবারবর্গের সাহায্যার্থে শীতবস্ত্র, কম্বল, সোয়েটার, কোট, প্যান্ট, মাফলার প্রয়োজন। আজই নিজে দিন ও সংগ্রহ করুন।
জমা দেয়ার ঠিকানা:
ন্যাশনাল রিলিফ অর্গানাইজেসন,
১১৯, বিপিন বিহারী গাঙ্গুলী স্ট্রীট,
(বিকাল ৪টা থেকে রাত্রি ৮ টা)
৬.১১.১৯৭১

৫১. শরণার্থী ত্রাণে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কমিশনের কর্মীদের দান
বরোদা, ৫ নভেম্বর (ইউ এন) তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কমিশনের কর্মচারীবৃন্দ বাঙলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ তহবিলে তাঁদের অর্ধদিনের বেতন দেবার সিদ্ধান্ত করেছেন।
৬.১১.১৯৭১
৫২. বাঙলাদেশের সমর্থনে অর্থ সংগ্রহে যোগ দিন
বাঙলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম সহায়ক সমিতির পক্ষ থেকে ১১ এপ্রিল রবিবার পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র অর্থ সংগ্রহ করা হবে।
এই উপলক্ষে সেদিন কলকাতায় সকাল ৮ টায় শ্যামবাজারে নেতাজীর মূর্তির পাদদেশ এবং একডালিয়া পার্ক থেকে দু’টি মিছিল বের হবে। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার এই অর্থ সংগ্রহ মিছিল দু’টির নেতৃত্ব করবেন যথাক্রমে মুখ্যমন্ত্রী শ্রী অজয় কুমার মুখোপাধ্যায় ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় সিংহ নাহার। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ মিছিলে থাকবেন।
এই মিছিল দু’টিতে যোগ দেবার জন্য সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
১০.১১.১৯৭১

৫৩. এন আর ও কর্তৃক মণি সিংকে ৩২,০০০ কলেরা প্রতিষেধক টিকা দান (স্টাফ রিপোর্টার)
কলকাতা, ১৩ নভেম্বর আজ ন্যাশনাল রিলিফ অর্গানাইজেশনের পক্ষ থেকে কোষাধ্যক্ষ শ্রমণি সান্ন্যাল বাঙলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রবীণ নেতা ও বাঙলাদেশ সরকারের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শ্রীমণি সিংয়ের হাতে ৩২,০০০ কলেরা প্রতিষেধক টীকা প্রদান করেন।
শ্রীসান্ন্যাল জানান, এই ঔষধ প্রথম কিস্তি হিসেবে দেওয়া হচ্ছে, পরে আরো ঔষধ দেওয়া হবে।
দান গ্রহণ করে শ্রীমণি সিং জানান, ঔষধপত্র মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সহায়ক। তিনি এন-আর-ওকে ধন্যবাদ জানান এবং মুক্তিসংগ্রামে সাহায্যদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
১৪.১১.১৯৭১

৫৪. বাঙলাদেশ তহবিলে দান
কলকাতা, ২৫ নভেম্বর (সংবাদদাতা) সম্প্রতি রাজবল্লভ পাড়া ব্যায়াম সমিতি বাঙলাদেশ তহবিলে ২০১ টাকা দান করেছেন।
বাঙলাদেশ মিশনের প্রধান হোসেন আলীর হাতে উক্ত অর্থের একটি চেক সমিতির সহসভাপতি শ্রীঅশোক মুখার্জী দিয়ে আসেন।
আসামের করিমগঞ্জ থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক দৃষ্টিপাত-এও তৃণমূলের দান নিয়ে অনেক খবর আছে। উদাহরণ স্বরূপ দু’একটির উল্লেখ করছি-

৫৫. বাংলাদেশ ত্রাণ কমিটী (পূর্ব প্রকাশিতদের পর)
লালচাঁদ ছগনমল গোলছা—১টি তৈল ও ৫১ টাকার কাপড়। চাঁদমল ভীখনচাঁদ—২টি তৈল, ১ বস্তা চিনি ও ২০০ টাকার কাপড়, চুণীলাল তনসুখ দাস লালানী। – ১ টি তৈল ও ১০০ টাকার কাপড়, তুলসীরাম তুলারাম জৈন— ১টি তৈল, ২ বস্তা লবণ, পাটুয়া ব্রাদার্স— ১টি তৈল, ১০০ টাকার কাপড়, জেঠমল তারাচাঁদ বোখরা— ১টি তৈল, এস নাহাটা অ্যান্ড সন্স- ১টি তৈল ও ৪ বস্তা লবণ, শেঠিয়া ব্রাদার্স— ২টি বিস্কুট, দানমল মূলচাঁদ— ২১ টাকার কাপড়, তুলারাম পুপুলিয়া— ১ পেটী চা, আনন্দমহল ভ্রমরলাল বক্সী— ২১ টাকার কাপড়, নথমল হেমরাজ—৫০ কেজি ডাইল, কনাইলাল তাঁতেড়—৫০ টাকার কাপড়, কিন্তুর চাঁদ বোখরা ৩১ টাকার কাপড়, হীরালাল বংশীলাল- ২১ টাকার কাপড়, হীরালাল আনন্দমল— ৩১ টাকার কাপড়, জৈন ব্রাদার্স- ৫১ টাকার কাপড়, রামলাল পানমল — ২১ টাকার কাপড়, কুমরমল বুথরা—১৮ ডজন মেচ, হুলাস চাঁদ মোতিলাল – ৫০ টাকার কাপড় রতনলাল করণী সেন—৮১ টাকার কাপড়, খেওরচাদ গঙ্গ— ৫০ কেজি ডাইল, সুগন চাঁদ সাও—৪১ টাকার কাপড়, কৈরেং সিংহ— ২টা, আচন মিয়া— ১টা, নিছার আলী— ১টা, রাজেন্দ্র ভট্টাচার্য্য— ১টা, খলিলুর রহমান—১টা, জহর আলী— ১টা, ভূপেন্দ্ৰ দাস — ১টা, আকদ্দছ আলী — ১টা, পাখী মিয়া—১টা, মতছিন আলী—১টা, আতর আলী—১টা, আজফর আলী—১টা, ইলাছুর রহমান — ১টা, শশীন্দ্র মোহন নাথ—১টা, কামনী কান্ত রায়—১টা, বারীন্দ্র সেন—১টা, নিহার রঞ্জন দাস — ২টা, যোগেন্দ্র নমশুদ্র— ১টা, সত্যেন্দ্র কুমার দাস— ১টা, মন্টুলাল দাস—১টা, তছব্বর আলী চৌধুরী—১টা, মনোরঞ্জন দাস, মনোরঞ্জন পাল–৩টা, রজনী কান্ত রায়—১টা, দেবেন্দ্র কুমার শৰ্মা—১টা, নিত্যগোপাল চৌধুরী—১টা মাহমদ আলী ১টা, ছবিব আলী—১টা, মজিদ আলী ১টা, দরবারী মিয়া—১টা, জলধর দাস— ১টা, আজিজুর রহমান—১টা, হাজী মকদ্দছ আলী—১টা তছব্বর আলী — ১টা, হেমলতা ঘোষ—১টা, আছাব আলী—১টা, আবদুল করিম—১টা, রিয়াছদ আলী—১টা, গোপেশ চন্দ্র ভৌমিক—১টা, সুরমান আলী—১টা, ধীন্দ্রে লাল নমশুদ্র—১টা, প্রেমেন্দ্র লাল বিশ্বাস, দেবেন্দ্র চন্দ্র দাস— ১টা, বীরেশ চন্দ্র নাথ ১টা, চরিত্র বালা দেরী—১টা, মনোরঞ্জন নাথ—১টা। (ক্রমশঃ)

দৃষ্টিপাত, ২৬ মে ১৯৭১

৫৬. বাংলাদেশ ত্রাণ কমিটি
সুনাতন দাস বৈষ্ণব- ১টা, চরিত্র মোহন দে- ১টা, অম্বিকা নমশূদ্র- ১টা, আবদুল মুক্তাদির চৌধুরী (উকিল) ৫০ টা, মতরুপ আলী মিয়া- ১০ টা, ছফির উদ্দিন আহমেদ- ২টা, ফুলেশ্বর সিংহ- ১টা, নির্মল কুমার ঘোষ- ৫টা, মো. আলীম উদ্দীন- ১টা, সতীশ মালাকার- ১টা, বীরেন্দ্র চন্দ্র দাস- ২টা, আবদুল মতলিব- ১টা, বিনয় মাধব ঘোষ- ১টা, বীরেন্দ্র নাথ-১টা, আকদ্দছ আলী ১টা, রাজেন্দ্র সূত্রধর-১টা, গোপাল সেনা- ১টা, হাজী আবেদুর রহমান- ১টা, গোপেন্দ্ৰ নমঃশূদ্র- ৫টা, বসারাত আলী- ১টা, পৃথ্বীরঞ্জন নমঃশূদ্র- ১টা, আ. নূর তালুকদার- ১টা, তনুসেনা সিংহ- ১টা, নিরোদ বরণ দেবনাথ- ১টা, মো. মতলব আলী- ১০টা, হাজী ছনোহর আলী- ২টা, বসারৎ আলী চৌধুরী- ৫টা, মচন আলী- ৫টা, আঃ মতিন- ৫টা, আজমত আলী- ৫টা, হাজী ছন্দান আলী- ৫টা, মছন আলী- ৩টা, সুনাহর আলী- ৫টা, আমীর আলী- ৫টা, হাসিম আলী- ৩টা, আ. মুতলিব- ৩টা, জহর আলী- ৫টা, ছিপত আলী- ৫টা, এমরাণ উদ্দীন- ৫টা, কুটি মিয়া- ৫টা, মইন উদ্দীন- ৫টা, মতি নাথ- ৫টা, অক্ষয় চন্দন নাথ- ৩টা, কুটিচান্দ নাথ- ৫টা, গজা নাথ- ৫টা, বঙ্কবিহারী নাথ- ৫টা, নিরোধ রঞ্জন নাথ- ২টা, ছিদ্দেক আলী তপাদার- ১টা, নিরঞ্জন মোহন সেন- ৫টা, শৈলেন্দ্ৰ চন্দ্ৰ দত্ত- ৩টা, বীরেন্দ্র চন্দ্র দেব- ৩টা, ছদ্দেক আলী- ৫টা।

দৃষ্টিপাত, ৯ জুন ১৯৭১