You dont have javascript enabled! Please enable it!

আরব তরুণদের সমর্থন

আরব দেশগুলোর যাদের বেশিরভাগ মুসলমান, ১৯৭১ সালে তাদেরই এগিয়ে আসা উচিত ছিল বাঙালি মুসলমানদের রক্ষায়, কিন্তু তাঁরা পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলমানদের সহায়তা করছিল যাঁরা বাঙালি মুসলমানদের হত্যা করছিল। সে ক্ষেত্রে কিছু আরব তরুণদের বাংলাদেশকে সমর্থন ছিল গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, তবে, বলে রাখা ভালো, যাঁরা সমর্থন করেছিলেন তাঁরা ছিলেন বামপন্থী।
পূর্ব জার্মানি বা জার্মান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক বা জিডিআর-এর রাজধানী বার্লিনে যুবাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক একটি সম্মেলন করত জিডিআর সরকার। জুন ১৯৭১ সালেও বার্লিনে এই অধিবেশন শুরু হয়েছিল। সেখানে অল ইন্ডিয়া ইয়ুথ ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট যোগিন্দর সিং দয়াল ও ইন্ডিয়ান ইয়ুথ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জনার্দন সিং ঘালোট আরবদের যুব সংগঠনের সঙ্গে আলোচনাকালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তোলেন এবং তখন তাঁরা একটি বিবৃতি দিতে সম্মত হন।
বিবৃতিতে প্রথমেই তাঁরা উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গণহত্যা চালাচ্ছে। ইসলামাবাদ ইসলাম বিপন্ন এই শ্লোগান তুলে এর আড়ালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে জঘন্য কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তাতে আরবের জনগণ আর বিভ্রান্ত হবে না।
বিবৃতিতে তাঁরা জানান, আওয়ামী লীগের ভূমিধ্বস বিজয়ের পরও জনগণের রায় মানতে অস্বীকার করে ইসলামাবাদ। পশ্চিম পাকিস্তানের একচেটিয়া ব্যবসার সিন্ডিকেটের সমর্থন পেয়ে ইয়াহিয়া খান গণহত্যা চালাচ্ছে। ইয়াহিয়া ও তার সৈন্যদের বর্বরতা ও গণহত্যা দেশটির ঐক্যে প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে।
আরব দেশগুলোর ‘তরুণদের প্রতি আহ্বান’ জানিয়ে তাঁরা বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের সংগ্রামরত তরুণদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রচার করতে এবং সামরিক শাসকদের গণহত্যার চিত্র তুলে ধরতে। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোরও উচিত পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর দেন—সিরিয়ার ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ইউনিয়ন, ইরাকের ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ইউনিয়ন, ইয়েমেনের আসালাফি ইয়ুথ মুভমেন্ট, সুদানের সুদানিজ ইয়ুথ ইউনিয়ন ও লেবাননের ডেমোক্রেটিক ইয়ুথ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
আরব বিশ্বের কোনো সংস্থা থেকে এ ধরনের বিবৃতি ছিল এই প্রথম।

সূত্র: নিউ এজ, দিল্লি, জুন, ১৯৭১
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামুন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!