মুজিব দিবস
শেখ মুজিবের জীবন রক্ষায় পশ্চিম বাংলায় পালিত হয় মুজিব দিবস। এর একটি পটভূমি ছিল। ইয়াহিয়া খান ২ আগস্ট বিবিসি ও ৩ আগস্ট সিবিএস টিভি-র এক সাক্ষাৎকারে জানান বন্দি শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের বিচার হবে। এ সংবাদে প্রবল প্রতিক্রিয়া হয় ভারতে। লোকসভায় তুমুল আলোচনা হয়। সব দল থেকেই সরকারের কাছে দাবি জানানো হয় মুজিবের প্রাণ রক্ষায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করার। বিভিন্ন রাজ্যে সমাবেশ ও মিছিল হতে থাকে। এ পরিপ্রেক্ষিতেই ৭ আগস্ট মুজিব দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন জেলায় ৭ আগস্ট সমাবেশ হয়। কলকাতায় বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সহায়ক শিল্পী ও বুদ্ধিজীবী সমিতি সমাবেশ আয়োজন করে। এতে যোগ দেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের লোক শিল্পীবৃন্দ।
ঐ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস হয় যা প্রস্তাব করেন তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায়। প্রস্তাবে বলা হয়েছিল “এই সমাবেশ বিশ্বের সমস্ত জনগণ আর ছোট বড় শক্তির দরবারে এই ব্যাগ্র উৎকণ্ঠিত দাবিটি পৌঁছে দিতে চায় যে, পাকিস্তানের নরহন্তা শাসকদের গুমঘর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবিলম্বে মুক্ত না করে আনলে ভবিষ্যতের কাছে আজকের জগৎ কখনও মুখ দেখাতে পারবে না। তাই আমরা চাই, শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাণ হননে উদ্যত পাকিস্তানি জল্লাদদের হাত থেকে বিশ্বমানবতার হস্তক্ষেপে স্তব্ধ হোক, অভিশাপে পাথর হোক। আমরা চাই অবিলম্বে নিঃশর্তে বঙ্গবন্ধু মুজিবের মুক্তি।”
সূত্র: দিলীপ চক্রবর্তী, একাত্তরের রাতদিন, ঢাকা, ২০১৮
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামুন