You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাংলাদেশের সমর্থনে বিভিন্ন ‘দিবস’

মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশের সমর্থনে বিভিন্ন দিবস পালন করা হয়েছিল বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে।
কলকাতায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ সংগ্রাম সহায়ক কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কমিটির উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ শিরোনামে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। তিনদিন ব্যাপী এই প্রদর্শনীর শেষ দিন ৩ মে ঘোষণা করা হয় ছাত্রদিবস হিসেবে।১
ছাত্র দিবসের সভায় সভাপতিত্ব করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা অনুপ মুখোপাধ্যায়। প্রধান অতিথি ছিলেন ‘জয় বাংলা ছাত্র ইউনিয়নের’ শিরিন বানু।
৯ জুলাই পালন করা হয় বাংলাদেশ সংহতি দিবস। পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রেসের সম্পাদক সোমনাথ ভট্টাচার্য ঘোষণা করেন ৯ তারিখ “যুব কংগ্রেসের ডাকে সারা ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশ সংহতি দিবস পালন করছে। কালো ব্যাজ পরে পথসভা করে ১১ জুলাই দিবস উদযাপিত হবে। সন্ধ্যা ৬ টায় সত্যনারায়ণ পার্কে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।”২
কোচিনে সিপিআইয়ের সম্মেলন। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন। সিপিআই ৭ অক্টোবর উৎসর্গ করল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশে। ঘোষণা করা হলো— “বাংলাদেশের সার্বিক স্বাধীনতার জন্য সেই দেশের জনগণের বিপুলায়তন অভ্যুত্থান, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রচণ্ড ক্ষমতা রাখে। বাংলাদেশের জনগণের বর্তমান মুক্তিসংগ্রাম-এশিয়া ও অন্য মহাদেশের জনগণের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য অংশ।”৩
সোসালিস্ট পার্টি অক্টোবরে বাংলাদেশ সপ্তাহ পালন করে। মহারাজাহাটে এ উপলক্ষে ২৪ অক্টোবর ‘বিরাট জনসভা’ অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন সোসালিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান হিমাংশু সরকার। সভায় শরণার্থীদের সর্বপ্রকার সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।৪
মস্কোপন্থি কমিউনিস্ট পার্টির ন্যাশনাল কাউন্সিল এক প্রস্তাবে ১৫ মে-কে বাংলাদেশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ঐ দিনটি থেকে তাঁরা বাংলাদেশের জন্য অর্থ সংগ্রহ থেকে অন্যান্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। অবশ্য এর আগে থেকেই তাঁরা সহায়তা দিচ্ছিল।
আগস্ট মাসে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ত্রিপুরার ছাত্ররা বাংলাদেশ দিবস পালন করে। আগরতলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সংবাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২ আগস্ট এ দিবস পালিত হয়— “জাতীয় ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র ব্লকের আহ্বানে আজ রাজধানী আগরতলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, ছাত্র-ছাত্রীরা মিছিল ও সমাবেশের মধ্য দিয়ে ‘বাংলাদেশ দিবস’ পালন করেন। বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের দাবিতে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাশ বর্জন করেন। এক বিশাল শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে শ্রী পীযূষ দেবরায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে মিলিত হয়। বিভিন্ন বক্তা বাংলাদেশকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দানের দাবী জানান।”৫

সূত্র:
১. যুগান্তর ৪.৫.১৯৭১
২. ঐ, ৯.৭. ১৯৭১
৩. দিলীপ চক্রবর্তী, একাত্তরের রাতদিন, ঢাকা, ২০১৮, পৃ. ১৩৫
8. Case for Bangladesh, Delhi, 1971
৫. দৈনিক সংবাদ, আগরতলা, ৩.৮.১৯৭১
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামু

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!