মিশিগানে নানা রকম
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় [অ্যান আরবর] এলাকায় বাংলাদেশকে নিয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হয়েছে। অ্যান আরব সিটি হলের সামনে অক্টোবরের শেষের শ’খানেক মানুষ ধর্ণা দেন। গণহত্যায় মার্কিন সহায়তা বন্ধের দাবি জানান তাঁরাও প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে আরো বেশি তথ্য জানানোর জন্য ধর্ণা শেষে একটি আলোচনা সভা হয়। সেখানে বক্তৃতা করেন, চাইনিজ স্টাডি সেন্টারের অধ্যাপক রোড মার্ফি, মেয়র হ্যারিস, অর্থনীতির অধ্যাপক আর সি পোর্টার ও দু’জন বাঙালি মোজাম্মেল হক ও রশিদুর রেজা ফারুকি।
অক্টোবরে মিশিগানের গভর্নর একটি দিন সারা মিশিগানে বাংলাদেশ দিবস পালনের ঘোষণা দেন। শুধু তাই নয় মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটর কেনেডিকে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু বলার জন্য। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক হাওয়ার্ড শম্যানের নেতৃত্বে শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রডরিক হুবার ও ডেবরা বার্নহার্ডট ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের সহায়তায় মিশিগানের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটারিতে [থাকার জায়গা] যাঁরা থাকেন তাদের একদিনের অনশন করার আয়োজন করেন। অক্টোবর ২৮ তারিখে অধ্যাপক পিটার হুক ও স্নেহলতা দীক্ষিত একটি মঞ্চ তৈরি করেন যেখানে বাংলাদেশের গণহত্যার দৃশ্য মূর্ত হয়েছিল। এটিরও আয়োজক ছিল ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ।
মিশিগানের নাগরিকদের কাছে বাংলাদেশের বিষয়টি আরো ভালোভাবে তুলে ধরার জন্য ইন্টারন্যাশনাল লিগ ফর পিস অ্যান্ড ফ্রিডম, ওয়াই ডব্লিউসিএ টাস্ক ফোর্সের যৌথ উদ্যোগে ১১ অক্টোবর একটি আলোচনা সভা আয়োজন করেন।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হক ছিলেন মুখ্য আলোচক। আলোচনা শেষে বাংলাদেশ-এর প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার জন্য জ্যানেট মায়ারের সভাপতিত্বে একটি বাংলাদেশ কমিটি গঠন করা হয়।
ইস্ট ল্যানসিং এরিয়া কমিটি ফর ইমার্জেন্সি রিফিউজি ফান্ড গঠিত হয় অক্টোবরে। উদ্দেশ্য, শরণার্থীদের জন্য ১০০,০০০ ডলার তোলা। ইতোমধ্যে তাঁরা বিভিন্ন গির্জা, প্রতিষ্ঠানে আবেদন করেছেন, জয়বাংলা বোতাম বিক্রি করছেন, চাঁদা তুলেছেন।
২২ নভেম্বর মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০০ ছাত্র দিনব্যাপী অনশন করেন। এবং শরণার্থীদের সহায়তার জন্য অর্থ দেন। বিকেলে ছাত্ররা একটি আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। বক্তৃতা করেন হ্যাংক হাইটউইট ও রড হুবার। বেথ লিন্ডবার্গের গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করেন ইন্দু মালিনী, শ্যারন লোয়ার। পিটার হক ও স্নেহলতা দীক্ষিত ছিলেন অনুষ্ঠানের আয়োজক। উপবাসের বিষয়টি সংগঠিত করেন বার্ট টাউব।
সূত্র: Bangladesh Newsletter, 25.10.1971; 25.11.1971, (10.12.1971)
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামুন