ইস্ট পাকিস্তান রিলিফ ফান্ড
এ সংস্থাটি সম্পর্কে বিশদ কিছু জানা যায়নি। যতটুকু জানা গেছে তা হলো— মিশিগানের মানবতাবাদী কয়েকজন মার্কিন নাগরিক এটি গড়ে তুলেছিলেন। এর চেয়ারম্যান ছিলেন- হাওয়ার্ড শুম্যান। উদ্দেশ্য বাংলাদেশের জন্য তহবিল সংগ্রহ। জুন মাসে তহবিল সংগ্রহের জন্য তাঁরা একটি আবেদন জানান। আবেদন জানিয়েছিলেন চেয়ারম্যান শুম্যান। কেন পূর্ব পাকিস্তানকে সাহায্য করা দরকার তার কারণগুলো তিনি উল্লেখ করেছিলেন—
১. ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে যে নির্বাচন হয়েছিল তাতে যাঁরা নির্বাচিত হয়েছিলেন তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ পূর্ব পাকিস্তানের জন্য অধিকতর স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে ছিলেন।
২. পাকিস্তান সরকার যা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রিত পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী দ্বারা তাঁরা নির্বাচনের ফল মানতে রাজি হয়নি বরং স্বায়ত্তশাসনের জন্য ক্রমবর্ধমান আন্দোলন দমন করতে চেয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমেরিকা অনেকাংশে এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে।
৩. এরই মধ্যে ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে মনুষ্য সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ।
এ পরিপ্রেক্ষিতে হাওয়ার্ড শুম্যান আবেদন জানিয়েছেন, পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দাদের সহায়তা জানাতে। তিনি জানিয়েছেন, দানকৃত অর্থ যতদিন না বৈধ উপায়ে পূর্ব পাকিস্তানের বাসিন্দাদের ত্রাণ পাঠানো যায় ততদিন এই অর্থ মার্কিন ব্যাংকে জমা থাকবে। অস্ত্রের জন্য এ অর্থ ব্যয় করা হবে না। পাকিস্তান সরকার ও সংশ্লিষ্ট যাঁরা এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত তাদেরও এই অর্থ পাঠানো হবে না। “আমরা রেডক্রস, আমেরিকান ফ্রেন্ডস সার্ভিস কমিটি বা এ ধরনের নিরপেক্ষ সংস্থাকে ব্যবহার করতে চাই।”
সূত্র: দলিলপত্র: ১৩ খন্ড
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামুন