ডোনান্ড চেসওয়ার্থ-এর বিশ্বাস
১৯৭১ সালে যে ৬ জন ব্রিটিশ এম.পি. বাংলাদেশের পক্ষে লড়াই করেছিলেন তাঁদের অন্যতম ডোনাল্ড চেসওয়ার্থ। আগস্টে তিনি দিল্লি পৌছান। ৭ আগস্ট দি হিন্দুস্থান টাইমসের পৃথ্বিশ চক্রবর্তীকে তিনি একটি সাক্ষাৎকার দেন। তিনি বলেন-
সার্বভৌম স্বাধীন বাংলাদেশ অবশ্যম্ভাবী। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মধ্যে এ সমস্যা অনুধাবনের কোনো চিহ্ন নাই। সেনাবাহিনীর বর্বরতার ফল হয়েছে একটি— মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যুদ্ধ করার ইচ্ছা দৃঢ় করেছে; মুক্তিফৌজের মনোভাব খুব দৃঢ়। ফরাসিদের বিরুদ্ধে আলজিরিয় যোদ্ধাদের যে কৌশল আমি দেখেছি মুক্তিযোদ্ধাদের কৌশল তার থেকে উন্নত। মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তান বাহিনীর যে ক্ষতি করছে তা সামলে উঠতে পারবে না পাকিস্তান। পাকিস্তান বাহিনীর ক্ষমতা ফরাসি বাহিনী থেকেও কম। এর উদাহরণ, রেলওয়ের বিপর্যস্ত অবস্থা।
ইসলামাবাদের সামরিক জান্তা ও বাংলাদেশের নেতাদের মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনা অনেক আগেই মিলিয়ে গেছে। যে বর্বরতা চলছে তা বাংলাদেশের মানুষের পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার ইচ্ছা আরো দৃঢ় করেছে।
ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ জেতার যে আশা করছে পাকিস্তান তার কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না। ভারত মুক্তিফৌজকে সাহায্য করছে এই অজুহাতে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যুদ্ধ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মানবে না। আর সবাই দেখছে যে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই নিজেদের জায়গা করে নিচ্ছে।
লেবার দলীয় সদস্য ডোনাল্ড চেসওয়ার্থ, আর্থার বটমলি, রেজিনাল্ড প্রেন্টিস, জন স্টোনহাউস প্রমুখের শুরু থেকেই বাংলাদেশ সমর্থন, রক্ষণশীল সরকারকে যথেষ্ট চাপের মধ্যে রেখেছিল এবং বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গঠনে সহায়তা করেছিল।
সূত্র: দলিলপত্র: খন্ড ১৩
একাত্তরের বন্ধু যাঁরা- মুনতাসীর মামুন