হবিগঞ্জ জেলার গণহত্যা ও শহীদদের তালিকা
ক্রমিক নং | স্থানের নাম, ঠিকানা এবং জিআর, ম্যাপ শিট নম্বার | ঘটনার বর্ণনা | শহীদ তালিকা |
১ | পুরাতন থানা ভবনের সাথে, নবীগঞ্জ থানা
সদর, ইউনিয়ন: নবীগঞ্জ পৌরসভা, থানা: নবীগঞ্জ সদর। ৬৭৮২৭৬, ৭৮পি/১০
|
ঘটনা ১৫ আগস্ট, নবীগঞ্জ থানা সদর ছিল পাকিস্তানি সেনাদের ঘাঁটি । নবীগঞ্জ এলাকার নিরীহ জনতাকে এনে থানার পার্শ্বে প্রায় ৮২জন মুক্তিযোদ্ধাকে একত্রে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে একটি গর্ত করে মাটি চাপা দেয়। তাঁদের স্মরণে বর্তমানে একটি স্মৃতিসৌধ আছে ।
|
স্মৃতিসৌধের ফলক থেকে প্রাপ্ত নবীগঞ্জ সদরে গণহত্যার শিকার বীর শহীদদের নামের তালিকা নিম্নরূপ :
শহীদ মো. সাবাজ মিয়া, শহীদ সুরেশ চৌধুরী, শহীদ রাজ কুমার বণিক, শহীদ শৈলন্দ্ৰ বণিক, শহীদ গজেন্দ্র দেব, শহীদ রায় মোহন শীল, শহীদ গোবিন্দ শীল, শহীদ কালি নমঃশূদ্র, শহীদ প্যারী মোহন দাশ, শহীদ অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচাৰ্য, শহীদ অমূল্য রঞ্জন, শহীদ বিকেন্দ্রনাথ ঢালী, শহীদ সুরেন্দ্র মহালদার, শহীদ কুমুদরঞ্জন চক্রবর্তী, শহীদ সুরেশ দাশ, শহীদ হীরালাল সাহা, শহীদ রশিকলাল সাহা, শহীদ স্নেহলতা চক্রবর্তী, শহীদ মো. হাবিব উল্লাহ, শহীদ ননী শীল, শহীদ যুগেশ দাশ, শহীদ পিয়ারী মোহন পাল, শহীদ কামিনী নমঃশূদ্র, শহীদ কুটি চান দেব, শহীদ মতি মিনি বৈদ্য, শহীদ উমেন্দ্র দেব, শহীদ হরিপদ দেব, শহীদ গোবিন্দ শীল, শহীদ নয়ন দাশ, শহীদ উমাকান্ত দাশ, শহীদ তন্মলোচন দাশ, শহীদ বীরেন্দ্র দাশ, শহীদ ললিত দাশ, শহীদ অমূল্য চন্দ্র দাশ, শহীদ প্ৰমোদ রঞ্জন নমঃশূদ্র, শহীদ মো. আব্দুল মান্নান, শহীদ মো. মোস্তফা, শহীদ মো. তসলিম উদ্দিন, শহীদ ওয়াসিল মিয়া, শহীদ গোপীচন্দ্ৰ দাস, শহীদ বরদাচন্দ্ৰ দাস, শহীদ বরদা সুন্দরী, শহীদ অধীর শব্দকর, শহীদ গণেশচন্দ্র দাশ, শহীদ গৌরচন্দ্র দাশ, শহীদ নিরাঙ্গা বালা দাশ, শহীদ ইরফান উল্লাহ, শহীদ অরুণ ভট্টাচার্য, শহীদ মন্তাজ উল্লাহ, শহীদ কালিপদ চক্রবর্তী, শহীদ সজল চক্রবর্তী, শহীদ বীরেন্দ্র চক্রবর্তী, শহীদ বালীকান্ত চক্রবর্তী, শহীদ পুলিনচন্দ্র হালদার, শহীদ যুমেশ নমঃশূদ্র, শহীদ নিমাই নমঃশূদ্র, শহীদ নিহানীচন্দ্ৰ দাস, শহীদ চিত্তরঞ্জন দাস, শহীদ সানা উল্লাহ, শহীদ আ. বারী, শহীদ মানিক মিয়া, শহীদ ইজ্জত আলী, শহীদ আলাউদ্দিন, শহীদ সুরাজিনী কিং, শহীদ ওয়াহিদউল্লাহ, শহীদ কালীচন্দ্র বিশ্বাস, শহীদ ভক্ত নমঃশূদ্র, শহীদ শ্রীনাথ আশ্চার্য, শহীদ গোপীয়া রঞ্জন পাল, শহীদ পরেশচন্দ্র দেব, শহীদ রাখাল দেব, শহীদ আনিছ উল্লাহ, শহীদ সরাফত উল্লাহ, শহীদ দরছু উল্লাহ, শহীদ জানু মিয়া, শহীদ রশিদ উল্লাহ, শহীদ যুগাই মহাশ্য দাস, শহীদ মথুর হতাশ্য দাস, শহীদ কাঞ্চন বালা বিশ্বাস, শহীদ হরেন্দ্রনাথ চন্দ্র রায়, শহীদ শান্তি বালা রায়, শহীদ দ্রব দাস, শহীদ অশ্বিনী কুমার নাথ। |
২ | গুচাপাড়া পালবাড়ি,
ইউনিয়ন: ২ নম্বর আহমদাবাদ, থানা: চুনারুঘাট । ৭১৯৭১৫, ৭৮ পি/১২
|
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলা ১২ জ্যৈষ্ঠ পাকিস্তানি বাহিনী গুচাপাড়া গ্রামের পালবাড়ি ও ধোপাবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং মুক্তিবাহিনী সন্দেহে ৯জনকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে পার্শ্ববর্তী পুকুরপাড়ে ২টি গর্তের মধ্যে মাটি চাপা দেওয়া হয়। | শহীদ বিপি পাল,
শহীদ হরেন্দ্র পাল, শহীদ বজেন্দ্র পাল, শহীদ সুরেন্দ্র ভট্টাচার্য, শহীদ অক্ষয় শুক্ল বুদ্ধ, শহীদ জ্যোতিন্দ্র চন্দ্ৰ শুক্ল, শহীদ টনুচন্দ্র শুক্ল বুদ্ধ, শহীদ আব্দুর রশিদ, শহীদ রইচ উল্লাহ । |
৩ | কৃষ্ণপুর গ্রাম, ইউনিয়ন: ১ নম্বর লাখাই,
থানা: লাখাই । ৩৪৯৮৭৭, ৭৮পি/৭
|
১৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি সেনারা কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানা থেকে ১টি বোট ও ২টি
স্পিডবোটযোগে কৃষ্ণপুর গ্রামে আগমন করে এবং সম্পূর্ণ গ্রামটি ঘিরে ফেলে । এ গ্রামের নৃপেন রায়ের প্রাচীর ঘেরা বাড়ির ভেতর পশ্চিম দিকে ১৫-১৬জন পুরুষকে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে । এতে ১২জন তাৎক্ষণিকভাবে মারা যান। অন্য যে ৪জন বেঁচে যান, তাঁদের মধ্যে ২জন (ভূষণচন্দ্র সূত্রধর ও মঞ্জু রায়) এখনো জীবিত । নৃপেন রায়ের বাড়ির ৪০০-৫০০ গজ পশ্চিমে (গদাইনগর) চিত্তরঞ্জন দাসের বাড়ির উত্তরের ঘাটে ৩৫-৪০জন গ্রামবাসীকে লাইনে দাঁড় করিয়ে স্টেনগান দ্বারা ব্রাশফায়ার করলে ১০- ১২জন শহীদ হন। কৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, নৃপেন রায়ের বাড়ির উত্তর-পশ্চিম দিক এবং অন্যান্য স্থানে সর্বমোট ৪৬জনকে হত্যার তথ্য পাওয়া গিয়েছে । এঁদের অধিকাংশকেই নিকটস্থ শ্মশানে দাহ করা হয়েছে। |
সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি ।
|
৪ | দুর্লভপুর গ্রামের
ঘোষপাড়া, ইউনিয়ন: জলসুখা, থানা: আজমিরীগঞ্জ । ৪১৩২৭৫, ৭৮ পি/৭
|
১৫ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী জলসুখা ইউনিয়নের দুর্লভপুর
গ্রামের ঘোষপাড়ায় ১০জন হিন্দুকে ধরে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাইফেল দ্বারা গুলি করে হত্যা করে । এঁদের মধ্যে ৯জন ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। |
সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি । |
৫ | গ্রাম: হলদারপুর, ইউনিয়ন: ৭ নম্বর বড়ইউড়ি,
থানা: বানিয়াচং। ৬৩২২০৮
|
২৯/৩০ এপ্রিল পাকিস্তানি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
বিমানবাহিনী হলদারপুর গ্রামের ওপর শেলিং করে। এর ফলে গ্রামে বেশ কিছু লোক তাৎক্ষণিকভাবে শহীদ হয়। মেজর জেনারেল এম এ রবের বাড়ি মনে করেই শেলিং করা হয় । তখন তিনি ছিলেন এমএলএ । |
সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি ।
|
৬ | খোয়াই নদীর তীরে (চুনারুঘাট উত্তর বাজারে খোয়াই উত্তর বাজার),
ইউনিয়ন: ৬ নম্বর চুনারুঘাট, থানা: চুনারুঘাট । ৭৯০৮৩১, ৭৮পি/১২ |
২৫-২৬ মে চুনারুঘাট উত্তর বাজারে খোয়াই নদীর তীরে ৫ জনকে হত্যা করা হয়।
|
সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। |
৭ | লালচান্দ চা- বাগান,
ইউনিয়ন: ৫ নম্বর শানখোলা, থানা: চুনারুঘাট । ৫৭২৮৭৫, ৭৮পি/৮
|
শায়েস্তাগঞ্জ দেউন্দি রাস্তার পাশে লালচান্দ চা-বাগানে ১১জন শহীদের সমাধি রয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরুর পর পরই পাকিস্তানি বাহিনী এঁদের সবাইকে ধরে এনে শায়েস্তাগঞ্জ রেল ক্রসিংয়ের কাছে হত্যা করে একটি গর্তে মাটি চাপা দেয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার ১০ মাস পর তাঁদের হাড়গোড় এনে এ স্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয় । | শহীদ কৃষ্ণ সরদার,
শহীদ সুনীল বাউড়ী, শহীদ ভুবন বাউড়ী, শহীদ মহাদেব, শহীদ বিপক বাউড়ী, শহীদ আনু মিয়া, শহীদ রাজেন্দ্র রায়, শহীদ গহর রায়, শহীদ নিপু বাউড়ী, শহীদ রাজ কুমার গোয়ালা, শহীদ লাল সাধু। |
৮ | নালুয়া ধরমনাথ,
ইউনিয়ন: ২ নম্বর আহমদাবাদ, থানা: চুনারুঘাট । ৬৮৭৭০৩, ৭৮পি/১২
|
কুমিল্লা-সিলেট সড়কের (সিঅ্যান্ডবি) ডান পাশে চান্দপুর চা-বাগানে শহীদ নিবারণ উরাংয়ের সমাধিস্থল । শহীদ নিবারণ উরাংয়ের নেতৃত্বে নালুয়া চা-বাগানের ১৭জন শ্রমিক নিয়ে একটি তোরন্দাজ বাহিনী গঠিত হয় । পাকিস্তানি
বাহিনী এঁদের সবাইকে ধরে এনে নালুয়া ধরমনাথ পশ্চিম চা-বাগানের শ্রমিক লাইনের পাকা কুয়াসংলগ্ন বটগাছের নীচে (বটগাছটি পরে কেটে ফেলা হয়) হত্যা করে । নিবারণ উরাংকে কাছেই সমাহিত করা হয়। স্বাধীনতার ১০ মাস পর তাঁর দেহ অক্ষত অবস্থায় মাটির নীচ হতে উদ্ধার করে বর্তমান স্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়। |
– |