সফিউল্লাহ, কে. এম মেজর জেনারেল, বীরউত্তম
যুদ্ধের শুরুতে ৩নং সেক্টর ও পরে ‘এস ফোর্সের’ অধিনায়ক ছিলেন মেজর জেনারেল (অবঃ) সফিউল্লাহ। ‘৭১-এ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় তিনি ছিলেন একজন মেজর। যুদ্ধের অব্যবহিত পূর্বে ছিলেন জয়দেবপুরস্থ ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। ২৫ মার্চ ঢাকায় হত্যাযজ্ঞের খবর পেয়ে মেজর শফিউল্লাহ তাঁর রেজিমেন্টের ৬ জন বাঙালি অফিসারসহ পুরো বাহিনী নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে।
২৭ মার্চ ঢাকা থেকে পালিয়ে আসা একজন সৈনিকের কাছে ২৫ মার্চের ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে জানতে পারেন মেজর শফিউল্লাহ। তখনই তিনি বিদ্রোহের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। পরিকল্পনা আগেই তৈরি ছিল। পরদিন সকাল ১০টায় দেড় কোম্পানি সৈন্য নিয়ে ৪টা জিপ, ৬টা ট্রাক ও একটি এম্বুলেন্সসহ টাঙ্গাইল হয়ে ময়মনসিংহের পথে রওনা হন।
৩নং সেক্টরের ভৌগোলিক সীমানা ছিল ঢাকা, ময়মনসিংহের একাংশ এবং টাঙ্গাইল, সিলেট ও কুমিল্লার উত্তরাংশ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমা)। মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকার কারণে ‘৭১ এর আগস্ট মাসেই তিনি লে. কর্নেল পদে উন্নীত হন। মেজর জেনারেল (অবঃ) সফিউল্লার জন্ম ২ সেপ্টেম্বর ১৯৩৫ সালে। ১৯৫৫ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করে প্রথম পাঞ্জাব রেজিমেন্ট ও পরে ২য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন। ‘৬৮ সালে তিনি কোয়েটাতে স্টাফ কলেজ করেন। ‘৭০-এর অক্টোবরে তিনি ২য় বেঙ্গলে সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে যোগ দেন। যুদ্ধের পর ‘৭২-এর ৭ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ‘৭৫-এর ২৪ আগস্ট সে দায়িত্ব থেকে তাঁকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ও.এস.সি. করা হয়। এরপর কানাডা, ব্রিটেন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।
[৫৪] আশরাফ কায়সার
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত