ষোড়শ বাহিনী
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এই ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসের সামরিক তৎপরতা। বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়। কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১-এর পর হঠাৎ করেই মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে, বিশেষত ঢাকাসহ নানা শহরাঞ্চলে রাতারাতি কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবকের আবির্ভাব ঘটে। এরা মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করতে থাকে, সামাজিক অস্থিরতা ও নানাবিধ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে থাকে। এই নব্য-মুক্তিযোদ্ধা বা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদেরকে চিহ্নিত করা হয় ‘সিক্সটিন্থ ডিভিশন’ বা ‘ষোড়শ বাহিনী’ হিসেবে। এই ‘ষোড়শ বাহিনীর’ সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তীকালে জীবন বাজি রাখা মুক্তিযোদ্ধাদের সুনামকে বিনষ্ট করতে তৎপর হয়। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি ও নিজেদের লাভের জন্যে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভাঙিয়ে এরা নানা সামাজিক অনাচারের কারণ হয়। অনেকে সন্দেহ করে থাকেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি সুকৌশলে একশ্রেণীর যুবককে এই ‘ষোড়শ বাহিনী’তে অন্তর্ভুক্ত করেছিল।
হারুন হাবীব
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত