ষোল নং সুইস গেট অপারেশন, কোম্পানীগঞ্জ, নোয়াখালী
১৯৭১-এর ৪ সেপ্টেম্বর কোম্পানীগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা একটি সিভিল অপারেশন করে। হেকিম আলী আহমদকে মেরে ফেলার পর তারা ১৬ সুইস গেটে রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করতে যায়। দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে তারা এই অপারেশন পরিচালনা করতে যায়। একটি ছিল রাজ্জাকের নেতৃত্বাধীন গ্রুপ, যে গ্রুপটিতে ছিলেন আবু নাসের, কেফায়েতউল্লাহ, আবুল কালাম, ছালেহ আহাম্মদ মজুমদার, আব্দুর রব বাবু, ফারুক, ইসমাইল, মোস্তফা কামাল ভুলু ও আখতারুজ্জামান। অন্যদিকে খিজির হায়াতের গ্রুপে ছিলেন নিজামউদ্দিন ফারুক, আবুল হোসেন, আবুল কালাম, নুরুল হুদা, শহীদুল্লাহ, প্রমুখ। উভয় গ্রুপেই দশজন করে ছিলেন। ৩ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার পর খিজির হায়াতের গ্রুপ এসে পৌঁছে চর দরবেশে মজিবুল হক কেরানীর বাড়ি। অপর দিকে আব্দুল রাজ্জাকের গ্রুপ ছিল বাংলা বাজারে। রাত দুইটার দিকে খিজির হায়াত গ্রুপসহ রাজাকার ক্যাম্প আক্রমণ করে চলে যায়। এই দিকে আব্দুর রাজ্জাকের গ্রুপটি এক বাড়ি থেকে খেয়ে আস্তে আস্তে রাজাকারদের অ্যামবুশ করার উদ্দেশ্যে বাংলাবাজার থেকে বাবনী দিয়ে ১৬ নং সুইস গেটের দিকে যায়। কয়েক ঘণ্টা আগের আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে রাজাকাররা অ্যামবুশ ফিট করে। মুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকের নেতৃত্বাধীন গ্রুপটি সেই অ্যামবুশের মুখে পড়ে এবং ছালেহ আহাম্মদ মজুমদার, ফারুক, ইসমাইল, আব্দুর রব বাবু, আখতারুজ্জামান, মোস্তফা কামাল ভুলু এই ছয় জন মারা যান এবং আবু নাসের আহত হয়। আব্দুর রব বাবু বিকেল পর্যন্ত বেঁচেছিলেন। এর মধ্যে ফারুকের লাশটি পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় ফারুকের লাশটি রাজাকাররা নিয়ে গিয়েছে। এই যুদ্ধের পর কোম্পানীগঞ্জে আব্দুর রাজ্জাকের পরিবর্তে ওবায়দুল কাদেরকে কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়।
[88] জোবাইদা নাসরীন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত