শিলাইদহ ক্যাম্প আক্ৰমণ, কুষ্টিয়া
শিলাইদহে দ্বারিক গ্রাম (হিন্দু অধ্যুষিত)-সহ সমগ্র ইউনিয়নেই পোড়ানো, লুটপাট- অত্যাচার অসহনীয় মাত্রায় শুরু হয়। জুনের শেষে অথবা জুলাইয়ের প্রথমদিকে তখন সবেমাত্র ভারত থেকে ছোট ছোট দু’একটি গ্রুপ পর্যবেক্ষণের জন্য আসা শুরু করেছে। তারা আবার চলে যেতো সংবাদ নিয়ে। এদের মধ্যে কেউ কেউ শিলাইদহে পদ্মার চরে স্থানীয় তরুণদের অস্ত্র পরিচালনা করা এবং গ্রেনেড নিক্ষেপের প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। এ সময়ে ভারত ফেরত কিছু উচ্ছৃঙ্খল ও বিপথগামী যুবক আ. হামিদ রসমিয়ার (খোরদেশপুর) নেতৃত্বে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে এবং রাজাকারদের অন্যায় অত্যাচারে সহায়তা করতে থাকে। এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মহসীন আলী (কল্যাণপুর), নাসির ডাক্তার (খোরশেদপুর), হাজত আলী (আড়পাড়া) সহ প্রায় ১৫ জনের একটি দল রাজাকারদের প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নেয়। তারা রাইফেল আর কিছু গ্রেনেড সম্বল করে বিশ্বাসঘাতক রাজাকারদের ক্যাম্প শিলাইদহ কাছারি বোর্ড আক্রমণ করেন। কিছু রাজাকার দেয়াল টপকে পালিয়ে পদ্মা পার হয়ে পাবনা চলে যায়। আর কিছু আত্মসমর্পণ করে। এই আক্রমণে ৩/৪টি রাইফেল এবং বেশ কিছু গুলি মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। উল্লেখ্য, জুন-জুলাইয়ের এই আক্রমণ ছিল থানার প্রথম আক্রমণ। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা ভারত থেকে তেমন আসেন নি। মূলত স্থানীয়দের দ্বারা পরিচালিত এই সফল আক্রমণ মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল অনেকখানি বাড়িয়ে দেয়।
[১২] এ. টি. এম. যায়েদ হোসেন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত