You dont have javascript enabled! Please enable it!

শিরগ্রাম যুদ্ধ, ফরিদপুর

বারাসিয়া নদী দিয়ে পাকসেনারা লঞ্চে যাতায়াত করত। মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকবার অতর্কিত আক্রমণ করে কিছুক্ষণ গুলিবিনিময়ের পর স্থান ত্যাগ করে। ‘হিট এন্ড রান’ পদ্ধতিতে যুদ্ধ চলে। ফরিদপুরের বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গার মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপগুলো সিদ্ধান্ত নিল চূড়ান্তভাবে মোকাবেলা করার। ৬ সেপ্টেম্বর। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা শিরগ্রাম গোরস্থান সংলগ্ন বারাসিয়া নদীর দুই পাশে বাঙ্কার খনন করে। নদীর মধ্যে খুঁটি গেড়ে পানির কিছুটা নিচ দিয়ে টেলিগ্রামের তার, বাঁশ, খেজুর গাছ ইত্যাদি বেঁধে রাখে যাতে লঞ্চের পাখা গুঁড়িয়ে যায় কিংবা তারে পাখা জড়িয়ে লঞ্চ থেমে যায়। বাঙ্কারে দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা মেশিন গান, রাইফেল উঁচিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। সকালে ১০/১২টা লঞ্চ নিয়ে পাকসেনারা কাশিয়ানী থেকে বোয়ালমারী অভিমুখে যাত্রাকালে গোরস্থানের কাছে এলে তারে পেঁচিয়ে প্রথম লঞ্চটা গতিরুদ্ধ হয়, অন্য লঞ্চগুলো থেমে যায়। সঙ্গে সঙ্গে দু’পাশ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের এলএমজি গর্জে ওঠে। দু’পক্ষই বৃষ্টির মতো গুলি ছুড়তে থাকে। পাকসেনারা ওপর থেকে মর্টার মেশিনগানের গুলি করতে শুরু করে। দুপুর ৩টা পর্যন্ত গুলিবিনিময়ের পর পাকসেনারা পিছু হটতে শুরু করলে মুক্তিযোদ্ধারা বাঙ্কার ছেড়ে বেরিয়ে এসে পাকসেনাদের গুলি করতে করতে তাড়া করে। হাজার হাজার জনতা উল্লাসে গগনবিদারী স্লোগান দিতে দিতে মুক্তিযোদ্ধাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যায়। পাকসেনারা পালিয়ে যায়। ঐ যুদ্ধে অনেক পাকসেনা হতাহত হয়। পক্ষান্তরে মুক্তিযোদ্ধা মঈনউদ্দিন (টোলারচর), আতিয়ার রহমান (টোলারচর), সায়েমউদ্দিনসহ (বানা) একজন পথচারী প্রাণ হারান। জলিল বিশ্বাস, সাত্তার, কাশিয়ানীর আক্কাস গ্রুপ, আহমাদুজ্জামান গ্রুপসহ কয়েকশত মুক্তিযোদ্ধা এই যুদ্ধে শরিক হয়।
[১৫] আবু সাঈদ খান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!