You dont have javascript enabled! Please enable it!

শালিখার যুদ্ধ, মাগুরা

মুক্তিযুদ্ধকালে বাগডাঙ্গা গ্রামের আবদুর রহিম ডাক্তার নিজেকে শালিখা থানার ওসি বলে পরিচয় দিতে থাকে এবং শালিখার সর্বত্র ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এ সময় সুসংগঠিত মুক্তিযোদ্ধারা শালিখা পাক ক্যাম্প আক্রমণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় ৭/৮ ঘণ্টাব্যাপী এই ভয়াবহ যুদ্ধের পর শালিখা পাক ঘাঁটি দখল করা হয়। পরদিন রাতে যশোর জেলার বাঘারপাড়া থানাধীন নারিকেলবাড়িয়া স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর মধ্যে মুখোমুখি যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা নিকাইল মোল্লা শহীদ হন। এই যুদ্ধের দিনটি ছিল বাংলা ১৩৭৯ সালের ৮ অগ্রহায়ণ। পরদিন শহীদের লাশ চিত্রা নদীতে ভেসে ওঠে। পাক হানাদার বাহিনীর সাথে দিঘি ব্রিজের দখল নিয়ে শালিখা থানায় সর্বশেষ যুদ্ধ হয় ৭ ডিসেম্বর। এই যুদ্ধে মুখোমুখি গুলি বিনিময়ের এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা জাফর আহমেদ শহীদ হন। ক্রমে শালিখাবাসীর জীবনে সেই কাঙ্ক্ষিত দিনটি এসে যায়। মাগুরা শহর ৭ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হলেও শালিখা থানা শত্রুমুক্ত হয় ১০ ডিসেম্বর। ঐদিন যশোর মুক্ত হওয়ার পর মিত্র বাহিনীর ট্যাঙ্ক আড়পাড়া পর্যন্ত এসে ফিরে যায়। একই দিনে ভোরে পাক হানাদার বাহিনীর সকল সদস্য আড়পাড়া খেয়াঘাট পার হয়ে মাগুরা অভিমুখে যাত্রা করে। যাওয়ার সময় ঘাটের ওপরে অপেক্ষামাণ একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং জাগলা ব্রিজের অর্ধেক বোমার আঘাতে উড়িয়ে দেয়। তবে শালিখা অঞ্চল পাকসেনা মুক্ত হলেও রাজাকার বাহিনী তখনো বেশ সক্রিয় ছিল। মুক্তির আনন্দে যখন মুক্তিযোদ্ধারা আত্মহারা, ঠিক সেই মুহূর্তে ১৫ ডিসেম্বর রাজাকার বাহিনী তালখড়ি গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। রাজাকারদের হাতে এ সময় শালিখার ৫ জন, গোপালগঞ্জ জেলার ১ জন ও রাজবাড়ি জেলার ১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এসব বীরযোদ্ধার নাম জানা যায়নি।

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!