You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.01.30 | ১৯৭২ সনের ৩০ জানুয়ারি শান্তি ও শৃঙ্খলা স্থাপনকারী বাংলাদেশী সেনাসদস্য ও পুলিশের উপর অতর্কিতে হামলা - সংগ্রামের নোটবুক

শামীম, ব্রিগেডিয়ার

স্থান: ঢাকা, মিরপুর
অপরাধ: ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সনের পরে বেশ কিছু দলছুট পাকসৈন্য, ইপিসিএএফ, রেঞ্জারস, মিলিশিয়া এবং অবাঙালি রাজাকার নিয়ে ব্রিগেডিয়ার শামীম মিরপুরে অবস্থান নেয়। তার নেতৃত্বে এদের সম্মিলিত বাহিনী আত্মসমৰ্পণ চুক্তি ও জেনেভা কনভেনশন ভঙ্গ করে ১৯৭২ সনের ৩০ জানুয়ারি শান্তি ও শৃঙ্খলা স্থাপনকারী বাংলাদেশী সেনাসদস্য ও পুলিশের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। দলছুট সৈন্য ও বিহারি রাজাকার পুষ্ট এই বর্বর দলটি কেবল আমাদের সেনাসদস্য, পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা অধিকাংশ সেনা ও পুলিশকেও মৃত্যুর পূর্বে নির্যাতন করে এবং মরদেহগুলোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খণ্ড-বিখণ্ড (Mutilation) করে গুম করে ফেলে। তার নেতৃত্বে যে সমস্ত রাজাকার ও পাকি দোসররা এই নিধনযজ্ঞে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল তাদের মধ্যে আক্তার গুণ্ডা, আলী আসগর মাস্তানা, মজিদ বোম্বার, কালু, বুল্লা, নেসার, ভকসা মাছওয়ালা, মোহাররম, শাহজাদা, কাম্মা, হাক্কু ও ছেদি উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়াও তাদের সহযোগীদের মধ্যে ছিল মাজহার, গনি, মুজাহিদ, কিয়াম, সাইদুল, জলিল, আনসারী, আকবর, কাইয়ুম, গোলাম আলী ও মেহদী হাসান।
এই আক্রমণে সেনা অফিসার লে. সেলিম, পুলিশ অফিসার এএসপি লোদী, দারোগা আলীমসহ ৪১ জন সেনা সদস্য, কয়েকশ’ পুলিশ ও মুক্তিযোদ্ধা এখানে শহীদ হন। এ সময় চলচ্চিত্র পরিচালক ও বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী জহির রায়হানসহ বেশ কিছু সিভিলিয়ানও এদের হাতে নিহত হন।
লে. সেলিম হত্যাসহ ৩০ জানুয়ারি ১৯৭২ সনে মিরপুরে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ড, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ব্রিগেডিয়ার শামীম ও তার বাহিনীকে অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা. এম.এ. হাসান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত