মিরাশী হাইস্কুল অপারেশন, চুনারুঘাট
চুনারুঘাট থানার মিরাশী উচ্চ বিদ্যালয়ে ছিল একটি রাজাকার ক্যাম্প। পাকিস্তানী বাহিনীর সহায়ক এ বাহিনীর প্রবল প্রতাপ এখানে। যত রকমের দুষ্কর্ম আছে তার সবকিছু সমানে চালিয়ে রাজাকাররা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাই তাদের সমুচিত শিক্ষা দিতে এগিয়ে আসেন মুক্তিসেনাদের একটি গ্রুপ। গ্রুপটির নেতৃত্বে ছিলেন ইপিআর হাবিলদার এমএ জহির। তাঁর সহকারী ছিলেন ফয়সল আহমদ চৌধুরী। সাথে ছিলেন আবদুল নূর, আবদুর রহমান, কাজী গোলাম মরতুজা, আবদুল সাত্তার, আবুল হোসেন, আবদুল লতিফ ও লিসু মিয়া প্রমুখ। ৩নং সেক্টরের সাব সেক্টর বাঘাইবাড়ি থেকে রওনা দেয় মুক্তিসেনাদের গ্রুপটি। পথের দূরত্ব ও রাজাকারদের সঠিক অবস্থান জেনে নিয়ে ৭ জুলাই দুপুর ৩টার দিকে গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা ভারতীয় সীমান্তে অতিক্রম করে পাহাড় জঙ্গল পাড়ি দিয়ে ১৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মিরাশী গ্রামের ১ কিলোমিটার দূরত্বে এসে একটি গ্রামে আশ্রয় নেয়। স্কুলের বাইরে ছিল ৪ জন সশস্ত্র প্রহরী। আক্রমণের শুরুতেই তাদের নিরস্ত্র করা হয়। তারপর বিদ্যালয়গৃহে জানালা দিয়ে ভেতরে গ্রেনেড চার্জ করা হয়। সাথে সাথে কভারিং পার্টি পেছনে থেকে ফায়ারিং দিতে থাকে। ফলে রাজাকাররা স্কুল ছেড়ে পালিয়ে যায়। ৩/৪ জন আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা স্কুলে প্রবেশ করে ৭টি রাইফেল হস্তগত করে এবং নিরাপদে বাঘাইবাড়ি ক্যাম্পে চলে যায়।
[৬৩] মাহফুজুর রহমান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত