মানেকশ, স্যাম, ফিল্ডমার্শাল (১৯১৪-২০০৮)
স্যাম হোরমুজজি ফ্রামজি জামশেদজি মানেকশ জন্মগ্রহণ করেন ভারতের অমৃতসরে ১৯১৪ সালের ৩ এপ্রিল। ছোট করে স্যাম মানেকশ নামেই তিনি বেশি পরিচিত। জাতিতে পার্সি এই ভদ্রলোক বাঙালিদের হৃদয়ে চির জীবন অমর হয়ে থাকবেন তাঁর অবদানের জন্য।
তিনি শেরউড কলেজে পড়াশোনা করেছেন। কথা ছিল ডাক্তারি পড়ার, কিন্তু বাধ সাধল বয়স। মাত্র ১৫ বছর হওয়ায় ইংল্যান্ডে যাবার জন্য পরিবার থেকে অনুমতি পাননি। সুতরাং, ভর্তি হয়ে গেলেন অমৃতসরের হিন্দু সভা কলেজে। হঠাৎ করে ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে সেখানে যোগদান করেন।
পেশাগত বর্নাঢ্য জীবনে অর্জন করেছেন বিভিন্ন সাফল্য। ১৯৩৪ সালে তিনি কমিশনপ্রাপ্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি “মিলিটারি ক্রস’ পদক অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে চীন-ভারত যুদ্ধ এবং ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ তাঁর বর্নাঢ্য কর্মজবিনের অংশ। ১৯৭২ সালে তিনি পদ্মভূষণ খেতাব পান। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি শুধু ভারতীয় বাহিনীরই প্রধান ছিলেন না মিত্রবাহিনীরও প্রধান ছিলেন। তাঁর তত্ত্বাবধায়নেই ৩ ডিসেম্বরের পর এত দ্রুত বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। বাংলাদেশ পাকিস্তানকে তাঁর নেতৃত্বেই পরাজিত করে। ইন্দিরা গান্ধী তাকে “ফিল্ড মার্শাল” পদবিতে ভূষিত করেন। ভারতে একমাত্র তিনি এই পদবি পান।
বলা হয়, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য গ্রীক সেনাপ্রধান সেলুকাস নিকেটরকে যেভাবে পরাজিত করেন, ২৩০০ বছর পর ফিল্ড মার্শাল মানেকশ ভারতের জন্য তেমনই এক বিশাল গৌরব অর্জন করেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে। তিনি ২০০৮ সালে পরলোক গমণ করেন।
রয়া মুনতাসীর
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত