মাদারগঞ্জ অ্যাম্বুশ, গাইবান্ধা
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার উত্তরে ঢাকা-রংপুর সড়কের পূর্ব পার্শ্বে সাদুল্লাপুর থানায় মাদারগঞ্জ এলাকা অবস্থিত। এপ্রিলের এক তারিখ থেকেই ৩ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সৈয়দপুর সেনানিবাস থেকে বিদ্রোহ করে নিজেদের পুনর্গঠন করার চেষ্টা করে। এপ্রিলের মাঝামাঝি সুবেদার আফতাবের দল বড়দরগা- সাদুল্লাপুর গাক্ষান্ধা সড়কের মাদারগঞ্জ এলাকায় প্রতিরক্ষা ব্যুহ রচনা করে। তাদের সঙ্গে ছিল একটি ৩.৫ ইঞ্চি ব্রেন্ডিসাইড। এটি মূলত ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্র। এক নির্ভীক সৈনিক ল্যান্স নায়েক মজিদ এটি চালাত। চাইনিজ এল এমজি ছিল সিপাহী তাহেরের কাছে আরেক দুর্ধর্ষ যোদ্ধা। শত্রু ঐ সময়ে ট্যাঙ্ক নিয়ে এই রাস্তা ধরে গাইবান্ধা শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। মাদারগঞ্জ এলাকায় পৌঁছলে সুবেদার আফতাবের দল আচমকা পাকিস্তানীদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে এবং ল্যান্স নায়েক মজিদ তার রেন্ডিসাইড থেকে পরপর তিনটি গোলা বর্ষণ করে। শত্রু এ পরিস্থিতির জন্য মোটেও তৈরি ছিলনা। লেন্ডিসাইডের ফায়ার ট্যাংক ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। ট্যাঙ্ক হারাবার ভয়ে শত্রু অগ্রাভিযান থামিয়ে দেয়। মুক্তি বাহিনীও কল্পনা করেনি শত্রু ট্যাঙ্কসহ এত বিপুল শক্তি নিয়ে এ পথে আসবে। বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলি চলার পর শত্রু পিছু হটে এবং রংপুর-ঢাকা সড়ক ধরে পুনরায় গাইবান্ধার দিকে অগ্রসর হয়৷
[৫৯৬] অমিত কুমার বিশ্বাস
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত