মাধবপুরের যুদ্ধ-৩, হবিগঞ্জ সিলেট
মাধবপুর পতনের পর পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সিলেট সড়ক ব্যবহার করতে শুরু করে। সড়কের প্রায় সবকটি ব্রিজ মুক্তিবাহিনী ভেঙ্গে দেয়। কিন্তু তারা বিকল্প রাস্তা তৈরি করে নেয়। লেফটেন্যান্ট মোরশেদ তেলিয়াপাড়া থেকে ১৪ মে বার জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে পাক সেনাদের অ্যামবুশ করেন। রাত ২টার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সিলেট সড়কের বিকল্প পথে ট্যাংক বিধ্বংসী মাইন পুতে রাখা হয়। অন্ধকার রাতে মুক্তিযোদ্ধারা বৃষ্টিতে ভিজে শত্রুদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। পরিদন সকাল ৮টা পর্যন্ত পাক সেনাদের গাড়ি ঐ পথে না আসায় লেফটেন্যান্ট মোরশেদ তার সৈন্যদের নিয়ে বিশ্রামের জন্য পাশের গ্রামে যান। কিছুক্ষণ পরে পাক সেনাদের একটি কনভয় সিলেট থেকে ঢাকার দিকে রওনা দেয়। প্রথমে একটি জিপ ও পরে একটি তিনটনি ট্রাক মাইন ফেটে বিধ্বস্ত হয় এবং বেশ কিছু সৈন্য হতাহত হয়। এ সময় পাকসৈন্যরা গাড়ি থেকে নেমে পুরো গ্রামটি ঘিরে ফেলে। তারা সংখ্যায় ছিল ৪০০ জন। লেফটেন্যান্ট মোরশেদের দল তখন পাকবাহিনীর উপর গুলি করে অবস্থান পরিবর্তন করতে বাধ্য হন। এ সময় পাক বাহিনী তাদের পিছু ধাওয়া করে প্রায় ৩ মাইল পর্যন্ত। মেজর জেনারেল সফিউল্লাহর মতে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এখানেই প্রথম ট্যাংক বিধ্বংসী মাইন ব্যবহৃত হয়েছিল।
[৬৩] মাহফুজুর রহমান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত