মাঝিড়ার অভিযান, বগুড়া
মাঝিড়া বগুড়া শহর থেকে আনুমানিক ৮/৯ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। মাঝিড়ার উপর দিয়ে চলে যাওয়া ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কটি পাকিস্তান বাহিনীর প্রধান সরবরাহ রাস্তা ছিল। মুক্তিবাহিনীর পাকবাহিনীর এই যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সংকটময় করার জন্য এই অভিযানের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর ৯.০০ টার সময় পাকসেনাদের একটি পর্যবেক্ষণ টহল যখন পায়ে হেটে মাঝিড়ার দিকে আসছিল তখন মোঃ জহুরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মুক্তিযোদ্ধার দল দুবলাগাড়ীর হাটের উত্তরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থান করছিল। স্থানীয় একজন লোকের কাছে পাকসেনাদের আগমনের সংবাদ পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল ইসলাম ১০/১২ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে মাঝিড়া মহাসড়কের পূর্বপার্শ্বে মাঝিড়া বাজারের ৮০০ গজ উত্তরে অবস্থান নেয়। পাকসেনারা ২০০ গজের মধ্যে এসে পড়লে মুক্তিযোদ্ধারা গুলিবর্ষণ শুরু করলে পাকসেনারা পশ্চিম দিকে দৌড়ে পালাতে শুরু করে এবং মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পিছু ধাওয়া করে। সম্মুখ যুদ্ধের একপর্যায়ে ৯ জন পাকসেনা নিহত হয়। অপরদিকে ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে আনুমানিক বেলা ১০.০০ টার সময় একই স্থানে বগুড়া থেকে ঢাকাগামী একটি পাকসেনাবাহিনী গাড়ীর উপর মুক্তিযোদ্ধাদের ৩টি দল অ্যাম্বুশ পাতে। অ্যাম্বুশ এলাকায় প্রবেশ করলে মুক্তিযোদ্ধারা গুলিবর্ষণ করে। এই যুদ্ধে অজ্ঞাত সংখ্যক পাকসেনা নিহত হয় এবং শ্রী ধীরেন কুমার নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়।
৫৯৭] চাঁদ সুলতানা কাওছার
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত