You dont have javascript enabled! Please enable it!

মদনা-দর্শনা যুদ্ধ, কুষ্টিয়া

দর্শনা এলাকায় মদনা ও হৈবতপুর দুটি পাশাপাশি ছোট পাড়াসদৃশ গ্রাম। আনুমানিক দুপুর ১টার দিকে ছোট বলদিয়া ক্যাম্পে খবর এলো যে, পাকবাহিনী হৈবতপুর গ্রাম ও মদনা গ্রাম ঘিরে ফেলেছে এবং জনগণ গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে। রাজাকাররা গ্রাম আক্রমণ করেছে। ছোট বলদিয়া ক্যাম্প এবং বারাদি ক্যাম্পের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা সাথে নিয়ে কমান্ডার রেজাউল করিম নামের একজন সিনিয়র মুক্তিযোদ্ধা মদনা-হৈবতপুর চলে আসেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ডেপুটি কমান্ডার রহমান (পরে মারা যান) তার নিজের কাছে থাকা গ্রেনেড শত্রুসেনাদের প্রতি ছুড়ে মারেন ফলে মুখোমুখি যুদ্ধ শুরু হয়। তুমুল গোলাগুলির মধ্যে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি করতে করতে পিছু হটে যায়, পাকিস্তানিরাও মুক্তিযোদ্ধাদের ধাওয়া করে। পরে ৭-৮ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়। পাকিস্তানী সৈন্যরা মুক্তিযোদ্ধা তাড়িয়ে নিয়ে যায় কিন্তু ওই মুহূর্তে বানপুর সাব-সেক্টর ক্যাম্প থেকে তৎকালীন ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন মুস্তাফিজ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে হৈবতপুর গ্রামের রাস্তার ত্রিমোহনীতে হাজির হন এবং পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন। এবার পাকিস্তানিরা ক্ষিপ্ত হয়ে হৈবতপুর ও মদনা গ্রামের বহু ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এই যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানিরা ২ ইঞ্চি মর্টার ফায়ার করে এবং সাহায্যকারী আর্টিলারি থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর গোলাবর্ষণ করে। ওই দিনই দুপুরের পরে মদনা গ্রামের মাঠের মাঝে ৪ জন নিরপরাধ বেসামরিক লোককে পাকবাহিনী হত্যা করে। এ ছাড়াও ১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে পাকবাহিনীর লোকেরা ধরে ফেলে এবং দর্শনা এলাকা থেকে কার্পাসডাঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ধৃত মুক্তিযোদ্ধা আ. মান্নানকে কার্পাসডাঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করে গাছে ঝুলিয়ে নিচে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে।

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!