You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভূঞাপুরের যুদ্ধ, টাঙ্গাইল

১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসের আট তারিখ। আনন্দ ও বেদনায় মিশ্রিত একটি দিন। এই দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযানে পাক-হানাদার মুক্ত হয় টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর। কোম্পানি কমান্ডার খন্দকার হাবিবুর রহমান এর নেতৃত্বে থাকেন। আব্দুল আলীম তালুকদারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গ্রুপ লক্ষ্মীপুর থেকে ভূঞাপুরে প্রবেশ করে। এছাড়াও আসাদুজ্জামান আরজু, নূর হোসেন, আঙ্গুর তালুকদারের কোম্পানিসহ প্রায় চার শ’ মুক্তিযোদ্ধা ভূঞাপুরকে পাক-হানাদার মুক্ত করার অভিযানে অংশ নেয়। সিরাজকান্দিতে জাহাজ দখলের পর মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও গোলা-বারুদের কোন সংকট ছিল না। কাজেই ভূঞাপুরের অভিযানে মুক্তিযোদ্ধারা ভারি অস্ত্র-শস্ত্র ও প্রচুর গোলা-বারুদ ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছিলেন। অভিযানকারী দলের কাছে একটি তিন ইঞ্চি মর্টার, দু’টি রকেট লান্সার, একটি ব্লান্ডার সাইট, দশটি দু’ইঞ্চি মর্টার, বিশটি গ্রেনেড থ্রোয়িং রাইফেল, পঞ্চাশটি এল.এম.জি ছাড়াও অভিযানে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার কাছে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ছিল।
মর্টার গ্রুপের নেতৃত্ব দেন সরিষাবাড়ির সামাদ গামা। ভারইয়ের আব্দুল হামিদ ভোলাদের বাড়ির উত্তর পাশে একটি ফাঁকা ভিটেবাড়ি থেকে মর্টারের গোলা ছোঁড়া হয়। মর্টার চালাতে সহযোগিতা করেন খোদা বখস, শামছুল হক মিঞা, আব্দুল হামিদ ভোলা, বকশিয়ার সিরাজ তালুকদার। ভূঞাপুর পাক-হানাদার মুক্ত অভিযানে ছাব্বিশার আব্দুল কদ্দুসসহ শুধুমাত্র ভূঞাপুর অঞ্চলেরই প্রায় পঞ্চাশ/ষাট জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন। এই যুদ্ধে ভূঞাপুর পাক-হানাদার মুক্ত হওয়ায় যেমন আনন্দের বিষয় ছিল, তেমনই ছাব্বিশার আব্দুল কদ্দুস সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হওয়ার ঘটনায় ভূঞাপুরবাসীর মন ছিল বেদনাবিধুর। এ যুদ্ধে ভূঞাপুর হাই স্কুলের হোস্টেল, ভূঞাপুর গালর্স স্কুলের রাজাকার ক্যাম্প ও অন্যান্য স্থান থেকে অস্ত্রসহ এক শ’ আট জন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে।
[১১২] শফিউদ্দিন তালুকদার
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!