You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভোমরার যুদ্ধ, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ ভোমরার যুদ্ধ। ভোমরা সাতক্ষীরা শহর থেকে ১০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এখানে এমএনএ গফুর ও সুবেদার আয়ুবের নেতৃত্বে একটি ক্যাম্প স্থাপন করে মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের ট্রেনিং দেয়া হতো। এখানে সকল সময় ৩০/৪০ জন যোদ্ধা অবস্থান করতেন। ২৯ এপ্রিল পাকবাহিনী ভোমরা মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণ করে বসে। এই অঞ্চলে পাকবাহিনীর সঙ্গে এটিই প্রথম সংঘর্ষ। পায় দু’ঘন্টা স্থায়ী যুদ্ধ শেষে পাকবাহিনী পিছু হটে সাতক্ষীরায় চলে যায়। এ যুদ্ধে ইক্ষু মিয়া নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ যুদ্ধে সুবেদার আয়ুব মূল ভূমিকা পালন করেন। পাকসেনাদের প্রত্যাবর্তনের পর মুক্তিবাহিনী ভোমরা ঘাঁটিতে আবার সংঘবদ্ধ হয়। এ ঘটনার পরপর কুষ্টিয়া থেকে ইপিআর- এর একটি দল মেজর আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে এখানে চলে আসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন ও মেহেরপুরের এসডিপিও মাহবুব। ফলে ভোমরা ক্যাম্পের অস্ত্র ও লোকবল বৃদ্ধি পায়। ২৯ মে পাকবাহিনী পুনরায় মুক্তিবাহিনীর প্রতিরক্ষা ব্যূহ আক্রমণ করে। ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন ও মাহবুবের নেতৃত্বে এ যুদ্ধে কৃতিত্ব দেখান সুবেদার আয়ুব আলী, সুবেদার শামসুল হক ও সুবেদার আবদুল জব্বার। খানসেনারা মুক্তিবাহিনীর ওপর প্রথম চার ঘন্টা আক্রমণ চালায়। এ যুদ্ধে ২২ এফএফ পাকবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন নিহত, সেই সঙ্গে তাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং এতে তাদের মনোবল ভেঙে পড়ে। পাক ক্যাপ্টেন নিহত হওয়ায় উৎসাহের বশে মুক্তিবাহিনী কয়েকজন লাশ আনতে এগিয়ে যায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, এই লাশ আনতে গিয়ে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়া সুবেদার শামসুল হকও শহীদ হন এবং সুবেদার জব্বার গুরুতর আহত হন। পরে খানসেনাদের মৃতদেহ ট্রাকে করে যশোর সেনানিবাসে নেওয়া হয়। প্ৰায় ২০০ পাকসেনা এ যুদ্ধে নিহত হয় বলে মুক্তিবাহিনী অনুমান করে। অবশ্য কয়েকদিন পরে ভোমরা পাকবাহিনীর দখলে চলে যায়।
[৬] আবু মোঃ দেলোয়ার হোসেন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!