ভবানীপুর যুদ্ধ, সিলেট
তেলিয়াপাড়া থেকে ধর্মঘর পর্যন্ত জেলা বোর্ডের একটা রাস্তা গেছে। জেলা বোর্ডে রাস্তা বলে সাধারণত এটাকে ডিসি রোড বলা হয়। জায়গাটা ভারতীয় সীমান্তের একেবারে কাছাকাছি অবস্থিত। দূরত্ব এক মাইলের বেশি। তেলিয়াপাড়া থেকে এ সড়কে পাকিস্তানী সৈন্যরা ধর্মঘর ক্যাম্পে যাতায়াত করত। মে মাসের ১৫-১৬ তারিখে এ সড়কে পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে একটি গ্রুপ প্রেরিত হয়। নায়েক রফিকউদ্দিন, আবুল খায়ের ও শাহ মোহাম্মদ মুসলিমসহ গ্রুপটি প্রবেশ করে দেশের ভেতরে। এই গ্রুপটির পথপ্রদর্শক ছিলেন একজন ডিম ব্যবসায়ী। প্রত্যেকের সাথে অস্ত্র আর নানা ধরনের গোলাবারুদ। অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মাইনও ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা রাতের বেলা তেলিয়াপাড়া-ধর্মঘর রাস্তা ধরে প্রবেশ করে ভবানীপুরকে অপারেশন স্থান হিসেবে নির্বাচন করেন। বৃষ্টির রাত। মাইন স্থাপনের পরপরই ওপরের মাটি সমান হয়ে যেতে থাকে। এভাবে রাত শেষ হয়ে যায়। তখন পর্যন্ত পাকবাহিনী এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করেনি। পরদিন সাল ৮টায় একটি সামরিক জিপ আসতে দেখা যায়। ঘটে তাতে বিস্ফোরণ। উল্টে যায় পাক সৈন্যবাহী যান। জিপের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয় ৫ জন। এদের একজন ক্যাপ্টেন, ১ জন লেফটেন্যান্ট এবং ৩ জন সাধারণ সিপাহী। অপারেশন সফল হওয়াতে উৎফুল্ল হন মুক্তিযোদ্ধারা। সাহস বৃদ্ধি পায় তাদের। শত্রু হননে হয়ে ওঠেন তারা আরো উৎসাহিত।
[৬৪] মাহফুজুর রহমান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত