ভাট পেয়ারীর যুদ্ধ, সিরাজগঞ্জ
বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তরে ভাট পেয়ারী অবস্থিত। ১৯৭১ সালে এই ভাট পেয়ারী স্কুলে পাকহানাদার বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহের নিমিত্তে এই ক্যাম্প আক্রমণের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তৎকালীন ছাত্রনেতা মোজাফফর হোসেনের নেতৃত্বে ৬০ জন মুক্তিযোদ্ধা মিলে এই স্থান আক্রমণ করে। মোজাফফর ও আমিনুর ইসলাম ৬০ জন মুক্তিযোদ্ধার এই দলটিকে প্রথমে চারভাগে ভাগ করেন। মুক্তিযোদ্ধারা কাজিপুর এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করে বিভিন্ন দল বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। বাজারের নিকট স্কুলের পাশে হাবিলদার আজিজ (নং ৩৯৩৭৭৬৪, ৪ ইস্ট বেঙ্গল) সহ আরো ১৮/২০ জন অবস্থান নেয়। স্কুলের সামনে শফিকুল ইসলাম ও তার দল অবস্থান নেয়। বাধের পূর্ব পাশে ফিরোজ ভূঁইয়া দল নিয়ে শত্রুর টেলিফোন লাইন কেটে দেয়, শত্রুর এলএমজি ছিলো স্কুলের ছাদে, এটা ধ্বংস করার জন্য তোতামিয়া (মুক্তিযোদ্ধা নং ৩১২০১০৩৬৯) সহ ২ জন মুক্তিসেনা বটগাছে চড়ে বসে। এদিকে শত্রুর ফায়ার শুরু হলে হাবিলদার আজিজ তার দল নিয়ে অবস্থান পরিবর্তন করে। অন্যদিকে এলএমজিম্যান শেখ আলাউদ্দিন স্কুলের পিছনে শত্রুর এলএমজি ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু তার অস্ত্র ব্লক থাকার কারণে তিনি রুমের ভিতর গুলি করতে না পেরে প্রত্যেকটা পরিখার মধ্যে গ্রেনেড ছোড়েন। ইতিমধ্যে সব শত্রু মারা যায়। শুধুমাত্র একটা রুমের ভিতর কিছু পাকসেনা জীবিত ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা রুমের ভিতর প্রবেশ করে তাদের অস্ত্র ফেলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করাতে বাধ্য করে। প্রায় দেড় ঘণ্টা এই যুদ্ধ চলেছিল। এই যুদ্ধে আমিনুর ইসলাম চৌধুরী ও মোতালেব আহত হলেও কোনো মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হওয়ার কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি
[৫৯৭] চাঁদ সুলতানা কাওছার
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত