চিলমারী যুদ্ধে হাত উড়ে যাওয়া আছিয়া খাতুন
আছিয়া খাতুন। একজন গৃহবধূ। তাঁর জ্যেষ্ঠ সন্তান ইপিআর বাহিনীর সদস্য ছিলেন। তিনি সেখান থেকে ভূরুঙ্গামারীতে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। ১৭ অক্টোবর কর্ণেল তাহেরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা চিলমারীতে পাকিস্তানি বিভিন্ন ক্যাম্পে আক্রমণ করেন। পাকিস্তানি বাহিনী পাল্টা আক্রমণ করে জবাব দিতে থাকে। পাকিস্তানি বাহিনী এক পর্যায়ে চাকলির পাড় গ্রামের দিকে ডাকবাংলো থেকে হেবি শেলিং করে। পাকিস্তানিদের নিক্ষেপিত বেশ কয়েকটি শেল আছিয়া খাতুনের বাড়ি তথা মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন সিদ্দিকীর বাড়িতে পড়ে, এতে করে শেলের আঘাতে আছিয়া খাতুনের স্বামী আবুল হোসেন এবং ৫ বছরের কন্যা আফিয়া খাতুন তৎক্ষণাৎ শহিদ হন। শুধু তাই নয়, একটি শেল আছিয়া খাতুনের সম্পূর্ণ ডান হাত উড়িয়ে নিয়ে যায়। তাঁদের সাথে থাকতেন চিলমারীর কুখ্যাত পচু ডাকাতের মা। তিনিও সেখানে শহীদ হন। (উল্লেখ্য, ছেলের ডাকাতির টাকার ভাত খাবেন না বলে আছিয়া খাতুনের বাড়িতে তিনি চালা তুলে থাকতেন)। আছিয়া খাতুনের আর এক সন্তান হায়দার আলী, মাথায় স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন।
একাত্তরে স্বামী ও কন্যাহারা এই জননী, এক হাত নিয়েই বেঁচে ছিলেন আরও চল্লিশ বছর। নিভৃতচারী এই আহত জননীর খবর কেউ রাখিনি আমরা। শুধু ইতিহাস রচনায় তাঁর কথা আমাদের মনে রাখতে হবে।
সূত্র: উত্তর রণাঙ্গনে সংখ্যালঘু গণহত্যা ও নারী নির্যাতন- এসএম আব্রাহাম