You dont have javascript enabled! Please enable it!

বোমার স্প্লিন্টারে ক্ষত-বিক্ষত আমিনার অজানা ইতিহাস

একাত্তরের যুদ্ধে আমিনার ওরফে আমেনার বয়স এক দেড় থেকে দেড় বছর। সবে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। পাকিস্তানি সৈন্যরা চিলমারী ঢুকে পড়েছে। যে যেভাবে পারছে জীবন বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দৌড়ের উপর তখন। রমনা পানাতি পাড়ার পিতা আজিজুল হকের কোলে আমেনা, মা লতিফন নেছাসহ বাড়ির পেছনে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা এমন সময় পাকিস্তানিদের বেপরোয়া শেলিং এর একটি শেল এসে আজিজুল হকের খুব কাছে পড়ে! পরিস্থিতি বুঝে আজিজুল হক শিশু আমেনাকে পাশের শুকনো খালে ঠেলে দেয়। পরক্ষণই বিস্ফোরিত শেলে আমিনার মা লতিফন নেছাসহ বাবা আজিজুল হক শহিদ হন। বিস্ফোরিত শেলেন অনেক স্প্লিন্টার শিশু আমেনার শরীরেও ঢুকে যায়। পরে চাচারা শিশু আমেনাকে উদ্ধার করে নিজেদের কাছে রেখে গ্রাম্য কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে প্রাণে রক্ষা করেন। এখনো তাঁর শরীরে স্প্লিন্টার ও স্প্লিন্টারের গভীর ক্ষত আছে। আজও তিনি সমগ্র শরীরে ব্যথা অনুভব করেন। বিশেষত মাথা, বুক ও পেটে তাঁর যন্ত্রণা আছে। যদিও পিতা-মাতা হারানোর যন্ত্রণাই তাঁর কাছে শরীরের যন্ত্রণার চেয়ে অধিক। চাচাদের সংসারে আমিনারা তিন বোন মানুষ হয়েছেন। তাঁরাই বিয়ে দিয়েছেন। আমিনার সংসারে আজ দু’টি কন্যা। তাঁর কষ্ট জন্মদাতা পিতামাতার মুখ দু’টো তিনি মনে করতে পারেন না। তাঁর পিতা-মাতার নাম শহিদের তালিকায় আছে কিনা তিনি জানেন না। তাঁকেও কেউ ইতিহাস অনুসন্ধানে খুঁজেনি কোনোদিন! কষ্ট লাগে ইতিহাস নির্মাতাদের অনেক ইতিহাস এখনো আমাদের অজানা।

সূত্র: উত্তর রণাঙ্গনে সংখ্যালঘু গণহত্যা ও নারী নির্যাতন- এসএম আব্রাহাম

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!