থানা পাড়া বধ্যভূমি
কুড়িগ্রাম শহর ধরলার কড়ালগ্রাসে বিলিন হলে পুরাতন শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সঞ্জিব করঞ্জাই এর একটি ভাড়া বাড়িতে থানার কার্যক্রম অনেকদিন ছিল। পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে ১৯৫৮ সালে নাজিরা, কৃষ্ণপুর ও হিঙ্গনরায় মৌজার ৩০২ একর জমি অধিগ্রহণ করে তথায় ১৯৬১ সালে নতুন শহর প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেখানে অফিস আদালত গড়ে তুললে থানা বা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অফিস নতুন শহরে স্থানান্তরিত হয়। থানা স্থানান্তরিত হলেও পুরাতন থানা এলাকায় বসতি গড়ে উঠেছিল বলেই পাড়াটির নাম থানা পাড়া হয়। জলের চাহিদা নিবারণের জন্য পুরাতন থানায় একটি কুয়া (ইন্দারা) ছিল। থানা অফিসটি ব্যক্তির নিকট ফিরে গেলেও কুয়াটি বহাল ছিল। ঐ থানা ভবনটির পাশেই ছিল সঞ্জিব করঞ্জাইর এর গোডাউন যেখানে পাকিস্তানিদের ক্যাম্প ছিল। ওই ক্যাম্পে অনেক নিরীহ বাঙালিকে ধরে এনে নির্যাতনের পর হত্যা করত। তাদের লাশগুলো ওই কুয়ায় ফেলে দিত এবং কাউকে কাউকে আবার অত্যাচারের পর হাত-পা বেঁধে জীবন্ত অবস্থায় ফেলে দিয়ে মেরে ফেলত। এগুলো হত্যাকাণ্ডের পেছনে পাকিস্তানি বাহিনী ছাড়াও স্থানীয় স্বাধীনতা বিরোধীদের সায় ও ভূমিকায় ছিল।
সূত্র: উত্তর রণাঙ্গনে সংখ্যালঘু গণহত্যা ও নারী নির্যাতন- এসএম আব্রাহাম