You dont have javascript enabled! Please enable it!

বোনারপাড়া লোকোসেড গণহত্যা

উত্তরবঙ্গে যে কয়টি স্থানে অবাঙালিদের অধিকসংখ্যায় বসবাস ছিল তার মধ্যে বোনারপাড়া উল্লেখযোগ্য। বিশেষত অবাঙালিদের বেশ প্রাধান্য ছিল বোনারপাড়া রেলজংশনে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বোনারপাড়ায় প্রায় তিন হাজার অবাঙালির বাস ছিল। ঐ সকল কুলাঙ্গার অবাঙালিরা বোনারপাড়াকে Third Bihar ঘোষণা করেছিল। ওই সকল অবাঙালিদের অনেকের পেশা ছিল রেলের চাকুরি, কসাইগিরি, মুদিখানা, টি স্টল ও পানের দোকানদার। বোনারপাড়ার অবাঙালিদের মধ্যে পৈশাচিক ভূমিকা রাখে জনৈক গণি কসাই, হাসবু (পানের দোকান), পেটলা (পানের দোকান), হান্নান (টি স্টল), গোলাম মোস্তফা, ছলিম বিহার। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এ সকল অবাঙালি পাকিস্তানিদের উপস্থিতিতে নিষ্ঠুর হয়ে ওঠে। তাদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী বোনারপাড়ায় নির্মম হত্যাযজ্ঞ সাধন করে।

ওই সকল অত্যাচারী অবাঙালিরা ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করে যেখানে মুক্তিপাগল বাঙালিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করত। শুধু তাই নয় বিহারিরা সেখানে ফাঁসিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর সেই সকল বাঙালির মৃতদেহ স্টিম ইঞ্জিনের বয়লারে নিক্ষেপ করত। কিছু কিছু বাঙালিকে ওই নরপশুরা বোনারপাড়া লোকোসেড স্টিম ইঞ্জিনের বয়লারে জ্যান্ত নিক্ষেপ করে পুড়ে মেরেছে। এরকমভাবে তারা বহুবার গণহত্যা সংঘটিত করে। তারা ১৭ অক্টোবর ১৯৭১ একদিনে স্টিম ইঞ্জিনের তপ্ত বয়লারে ১৩ জন নিরীহ বাঙালিকে নিক্ষেপ করে হত্যা করে। দেশ স্বাধীনের আগে আগে পরিস্থিতি বুঝতে পেরে পাঁচজন অবাঙালি ঘাতক ৫ ডিসেম্বর বোনারপাড়া থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সৈয়দপুর পালিয়ে যায়। ১৭ অক্টোবরের শহিদদের মধ্যে দু’জন বাঙালি মহিলা ছিলেন তাঁরা হলেন—

ক্র. শহিদের নাম পিতার নাম ঠিকানা
শহিদ লিচু বেগম আব্দুল হামিদ বোনারপাড়া, গাইবান্ধা
শহিদ সখিনা খাতুন স্বামী আব্দুল হামিদ বোনারপাড়া, গাইবান্ধা

(পূর্ণাঙ্গ তালিকা নয়)

সূত্র: উত্তর রণাঙ্গনে সংখ্যালঘু গণহত্যা ও নারী নির্যাতন- এসএম আব্রাহাম

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!