পাখেড়া গ্রাম গণহত্যা
যুদ্ধের নয় মাসে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় বিশটির অধিক গণহত্যা সংঘটিত করে বর্বর পাকিস্তানিরা। এ গণহত্যাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য গণহত্যা ছিল পাখেড়া গণহত্যা। ১৯৭১ এর ১৮ অক্টোবর পাকিস্তানি বাহিনী স্থানীয় রাজাকার ও পিস কমিটির সদস্যের সহযোগিতায় হরিরাম ইউনিয়নের পাখেড়া গ্রামে আক্রমণ করে। ওইদিন তারা সকাল ১০টার পরপরই পাখেড়া গ্রামে ঢুকে ওই গ্রামের জনপ্রিয় শিক্ষক যিনি মাতৃভূমি ছেড়ে অন্যত্র যান নাই বরং স্থানীয় ছাত্র যুবকদের দেশের জন্য লড়াইয়ে সাহস যুগিয়েছেন তাঁকেসহ ৪ জন বাঙালিকে আটক করে। একইসঙ্গে ঐ গ্রামে কৃষি মজুরি দিতে আসার আরও ৩ জন বাঙালি হিন্দুকে পাকিস্তানিরা আটক করে। তাঁদেরকে পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে নিয়ে গিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।
পাখেড়া গণকবরে যাঁরা মাটি চাপায় সমাহিত হয়েছিলেন সে সকল শহিদ হলেন—
ক্র. | শহিদের নাম | পিতা/স্বামী | ঠিকানা |
১ | শহিদ দীনেশ চক্রবর্তী | রতিকান্ত চক্রবর্তী | পাখেড়া, হরিরামপুর, গোবিন্দগঞ্জ |
২ | শহিদ ভবানী সরকার | পূর্ণ চন্দ্র সরকার | পাখেড়া, হরিরামপুর, গোবিন্দগঞ্জ |
৩ | শহিদ খোকারাম সরকার | পূর্ণ চন্দ্র সরকার | পাখেড়া, হরিরামপুর, গোবিন্দগঞ্জ |
৪ | শহিদ অশ্বিনী কান্ত সরকার | রামহরি সরকার | পাখেড়া, হরিরামপুর, গোবিন্দগঞ্জ |
৫ | শহিদ হরিকান্ত বর্মণ | হলধর বর্মণ | ক্রোড়াগাছা, হরিরামপুর, গোবিন্দগঞ্জ |
৬ | শহিদ কৈলাশ চন্দ্র বর্মণ | হলধর বর্মণ | ক্রোড়াগাছা, হরিরামপুর, গোবিন্দগঞ্জ |
৭ | শহিদ গোড়া চন্দ্র বর্মণ | হনু রায় বর্মণ | ক্রোড়াগাছা, হরিরামপুর, গোবিন্দগঞ্জ |
(পূর্ণাঙ্গ তালিকা নয়)
উল্লেখিত শহিদেরা হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত হলেও তাঁদের ভাগ্যে শ্মশান হয় নাই। ওই সকল শহিদ বাঁশঝাড়ের মাটিতেই সমাহিত হয়েছিলেন।
সূত্র: উত্তর রণাঙ্গনে সংখ্যালঘু গণহত্যা ও নারী নির্যাতন– এসএম আব্রাহাম