You dont have javascript enabled! Please enable it!

দখিগঞ্জ গণহত্যা ও বধ্যভূমি, রংপুর

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রথম থেকেই টার্গেট ছিল তিস্তা ব্রিজ। এই ব্রিজটি তাদের দখলে না থাকলে তিস্তা নদীর পূর্ব পাড় অর্থাৎ বুড়িমারী থেকে রৌমারী পর্যন্ত প্রায় ৫০০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা মুক্তাঞ্চল থেকে যায়। যার ভেতরে লালমনিরহাট বিমানবন্দর ও রেলওয়ে জংশন ছিল। সঙ্গতকারণে মুক্তিবাহিনী ২৮ মার্চ থেকেই তিস্তা ব্রিজের দখল নেন। সেখানে বিপুল সংখ্যক আনসার, ইপিআর ছাত্র জনতা অবরোধ করে থাকেন। এরই মধ্যে তিস্তা ব্রিজে রেকি করতে আসে রংপুর সেনানিবাসের সামরিক অফিসার মেজর এজাজ মোস্তফা সৈয়দ ও লালমনিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ ১৫ জন। তাদের প্রতিরোধ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। ওই প্রতিরোধে এজাজ মোস্তফা সৈয়দসহ ১৫ জনই নিহত হয়। পরে ব্যাপক যুদ্ধ হয়। তিস্তা ব্রিজের দখল নিতে না পারার ব্যর্থতা পাকিস্তানিদের পাগল প্রায় করে তোলে। তারা তাদের সেনা অফিসারের মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। এ কারণে বেড়ে যায় তাদের হিংস্রতা, তারা মরিয়া হয়ে ওঠে যে কোনো মূল্য ও কৌশলে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট দখলের। তারা তিস্তা ব্রিজে ব্যাপক সৈন্য সমাবেশ করে। পাকবাহিনী প্রতিশোধের নেশায় ২৭ মার্চ রংপুরে গ্রেফতারকৃত ন্যাপ নেতা এডভোকেট মাহফুজ আলী জররেজ সহ ১১ জন বন্দিকে ৩ এপ্রিল দখিগঞ্জ শ্মশানে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় তারা সমগ্র রংপুরে তাণ্ডব চালায়। তাঁদের গণহত্যার শিকার হয় ট্রেন ও বাসে করে আসা বিভিন্ন এলাকার মানুষজন। অসংখ্য নারী নির্যাতনে শিকার হন। ৩ এপ্রিল গণহত্যায় আহতদের মধ্যে মন্টু নামে একজন বেঁচে গিয়েছিলেন। দখিগঞ্জে ৩ এপ্রিল গণহত্যার শিকার অনেকেই হয়েছিলেন যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিন্দু পরিবারের সদস্য হলেন—

ক্র. শহিদের নাম পিতার নাম ঠিকানা
শহিদ উত্তম কুমার অধিকারী অজ্ঞাত রংপুর শহর, রংপুর
শহিদ গোপাল চন্দ্র অজ্ঞাত রংপুর শহর, রংপুর
শহিদ দূর্গাদাস অধিকারী অজ্ঞাত রংপুর শহর, রংপুর
শহিদ ক্ষিতিশ হাওলদার অজ্ঞাত রংপুর শহর, রংপুর

(পূর্ণাঙ্গ তালিকা নয়)

সূত্র: উত্তর রণাঙ্গনে সংখ্যালঘু গণহত্যা ও নারী নির্যাতন– এসএম আব্রাহাম

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!