দমদমা ব্রিজ শহিদ বুদ্ধিজীবী গণহত্যা
স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুর পূর্ব থেকে উত্তরবঙ্গের এই শিক্ষাপীঠটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিশেষ অবদান রেখেছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংসদের ভিপি শহিদ খন্দকার মুখতার ইলাহী, চৌধুরী খালেকুজ্জামান, ফুলু সরকারসহ অসংখ্য ছাত্র রাজনৈতিক বিশেষ অবদান রাখেন। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের নেতৃত্বে ৩ মার্চ রংপুরে ছাত্র গণঅভ্যুত্থান হয় সেদিন স্কুল ছাত্র শংকু সমাজদার, ওমর আলী ও আবুল কালাম নামে তিন ছাত্র জনতা শহিদ হন। রংপুর সেনানিবাস আক্রমণসহ এসব কারণে পাকিস্তানি বাহিনী এসব কারণে এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র শিক্ষকদের উপর পাকিস্তানি বাহিনীর কারমাইকেল কলেজের উপর নজর ছিল। সে কারণে ৩০ মে পাকহানাদার বাহিনীর কনভয় উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ কারমাইকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অতর্কিত প্রবেশ করে। তারা প্রবেশ করেই হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষকদের খুঁজতে থাকে। সেদিন হানাদার বাহিনীর সাথে কয়েকজন মুখোশধারী আসে। সেই কুলাঙ্গাররা কলেজের হিন্দু শিক্ষকদের ঘরদোর চিনিয়ে দেয়। তাদের দেখানো মতো অধ্যাপক সুনিল বরণ চক্রবর্তী, অধ্যাপক রামকৃষ্ণ অধিকারী, অধ্যাপক চিত্ত রঞ্জন রায়, অধ্যাপক কালা চাঁদ রায়দেরকে আটক করে পাকিস্তানি বাহিনী। পাকিস্তান আর্মি তাঁদের ধরেই রাইফেলের বাট দিয়ে বেধড়ক আঘাত করতে থাকে। সে সময় অধ্যাপক কালা চাঁদের স্ত্রী শ্রীমতি মঞ্জুশ্রী রায় তাঁর স্বামীকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে ঘাতকরা তাকেও আঘাত করতে করতে গাড়িতে তুলে নেয়। এই সকল বরেণ্য বুদ্ধিজীবীদের সেখান থেকে সোজা দমদমা ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। এই দমদমা ব্রিজেই সেদিন সংঘটিত হয় রংপুরের নৃশংসতম বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। ওই হত্যাকাণ্ডে যুদ্ধাপরাধ আদালতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী এটিএম আজহারুল ইসলামের সহযোগিতা ছিল।
রংপুরে হত্যাকাণ্ডের শিকার বুদ্ধিজীবীদের নাম
ক্র. | শহিদের নাম | পিতার নাম | ঠিকানা |
১ | শহিদ প্রফেসর কালাচাঁদ রায় | অজ্ঞাত | কারমাইকেল কলেজ, রংপুর |
২ | শহিদ প্রফেসর রামকৃষ্ণ অধিকারী | অজ্ঞাত | কারমাইকেল কলেজ, রংপুর |
৩ | শহিদ প্রফেসর সুনীলবরণ চক্রবর্তী | অজ্ঞাত | কারমাইকেল কলেজ, রংপুর |
৪ | শহিদ মঞ্জুশ্রী রায় | শহিদ কালাচাঁদ রায় | কারমাইকেল কলেজ, রংপুর |
৫ | শহিদ মিলি চৌধুরী | ভিকু চৌধুরী | মুন্সী পাড়া, রংপুর |
এছাড়া হত্যাকাণ্ডের শিকার হন
১ | শহিদ রেনুবালা ঘোষ | অজ্ঞাত | গোমস্তা পাড়া, রংপুর |
২ | শহিদ রাবেয়া খাতুন | অজ্ঞাত | রংপুর |
৩ | শহিদ রঞ্জিনা | অজ্ঞাত | দেওডোবা, রংপুর |
৪ | শহিদ হাইরো বিবি | অজ্ঞাত | দেওবলিযা, রংপুর |
৫ | শহিদ রেজিয়া খাতুন | অজ্ঞাত | অজ্ঞাত |
(পূর্ণাঙ্গ তালিকা নয়)
সূত্র: উত্তর রণাঙ্গনে সংখ্যালঘু গণহত্যা ও নারী নির্যাতন– এসএম আব্রাহাম