জাফরগঞ্জ গণহত্যা
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে মুক্তিযোদ্ধারা প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির পর ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ছোট-খাটো গেরিলা তৎপরতা শুরু করে। গেরিলারা ৮ জুন মঙ্গলবার রংপুর রেডিও স্টেশনের সম্মুখে এবং ৯ জুন ওরিয়েন্টাল সিনেমা হলের সামনে গ্রেনেড হামলা করে। ফলশ্রুতিতে রেডিও স্টেশনের আশপাশ এলাকা থেকে বেশ কিছু নিরীহ মানুষকে ধরে নিয়ে রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অমানসিক নির্যাতন চালায় পাকিস্তানি বাহিনী। পাকিস্তানিরা ১০ জুন বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হতভাগ্য ২৪০ জন নিরীহ বাঙালিকে রংপুর-সৈয়দপুর সড়কের জাফরগঞ্জ ব্রিজের কাছে গুলি করে হত্যা করে। হত্যার পর ব্রিজের নিচেই লাশগুলো ফেলে দেয়। পাকিস্তানিদের ভয়ে কেউ তাদের দাফন করার জন্য এগিয়ে আসতে পারেননি। হতভাগ্য শহিদদের বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। যাঁরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন তাঁরা ছিলেন সাধারণ কৃষক, শ্রমিক শ্রেণির। সকলেরই পরনে লুঙ্গি ছিল। ওই সকল মানুষকে ধরে এনেছিল পাকিস্তানিরা কারণ তারা নাকি মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দান করেছিলেন। নৃশংসতার শিকার শহিদের লাশ ঘটনাস্থলে ২-৩ দিন যাবৎ পড়েছিল। পরে কুকুর শকুনের আহার হয়েছে লাশগুলো। অনেক লাশ জলে ভেসে গেছে। এই গণহত্যায় বহু সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যও ছিলেন।
সূত্র: উত্তর রণাঙ্গনে সংখ্যালঘু গণহত্যা ও নারী নির্যাতন- এসএম আব্রাহাম