You dont have javascript enabled! Please enable it! শরফুদ্দিন আহমেদ, বীর উত্তম - সংগ্রামের নোটবুক

শরফুদ্দিন আহমেদ, বীর উত্তম

ক্যাপ্টেন শরফুদ্দিন আহমেদকে স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বেপূর্ণ কৃতিত্বের জন্য বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করা হয়। কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার সুলতানপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম শামসুল আলম একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ও মাতা হাসিনা বেগম একজন গৃহিনী ছিলেন। তিনি এসএসসি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। ব্যক্তিগত জীবনে শরফুদ্দিন আহমেদ অবিবাহিত ছিলেন। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিরীহ বাঙালীদের ওপর নির্মম অত্যাচার করতে থাকে।
পাকিস্তানী সৈন্যরা নির্বিচারে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ চালাতে থাকে। এর প্রতিবাদে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীতে কর্মরত অনেক বাঙালি পক্ষ ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। শরফুদ্দিন আহমেদ তাদের মতো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালের ৫ মে জীবনের ঝুকি নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধ যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত কিছু বিমান সেনা, পিআইএ কর্মরত কিছু পাইলট ও টেকনিশিয়ানের সমন্বয়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গড়ে তোলা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর ব্যবহারের জন্য কোনো বিমান ঘাঁটি না থাকায় তারা ভারতের আসামের ডিমাপুর বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করত। ফ্লাইট লেফটেনেন্ট সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা অপারেশন পরিচালনা করত। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধারা চট্টগ্রাম বন্দর ধ্বংস, চট্টগ্রাম তৈল শোধনাগার, ভৈরব সদর দপ্তর, নারায়ণগঞ্জ বন্দর ও নরসিংদী আক্রমণে প্রশংসনীয় অবদান করেন। এছাড়াও তারা বিভিন্ন স্থানে স্থল বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ক্যাপ্টেন শরফুদ্দিন আহমেদ সিলেট-চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানী সৈন্য ও তাদের তাবেদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা হামলা ও সম্মুখ যুদ্ধে অত্যন্ত সাহসিকতার পরিচয় দেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ঢাকা বিমান বন্দরে বিমান দুর্ঘটনায় পতিত হন এবং মৃত্যুবরণ করেন।
হাবিবা ইসলাম বিভা

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত