লৌহজং থানা দখল, মুন্সিগঞ্জ
লৌহজং মুন্সিগঞ্জের পশ্চিম দক্ষিণে অবস্থিত একটি প্রত্যন্ত থানা। এই থানার ডিউটিতে নিয়োজিত ছিল বাঙালি পুলিশ ও রাজাকার। পাকিস্তানি সৈনিকরা এখানে স্থায়ীভাবে থাকত না। তারা মাঝে মাঝে এখানে আসত, আবার চলে যেত। এ এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা লৌহজং থানা দখলের সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে লৌহজং তথা বিক্রমপুরের মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয় গিয়াসউদ্দিনের বাড়িতে সমবেত হয়ে লৌহজং থানা আক্রমণের পরিকল্পনা করে। প্রায় ৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধা এ অপারেশনে অংশগ্রহন করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধারা দুটি দলে ভাগ হয়ে একটি দল থানার উত্তর পাশে ও অন্যদল থানার সামনে দিয়ে লৌহজং মেডিকেলের পাশে অবস্থান নেয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বিতীয় দলটি গ্রেনেড ছুঁড়ে আক্রমণের সূচনা করে, এরপরে শুরু হয় গুলি। কিন্তু থানা থেকে কোন গুলি আসেনি। পুলিশ ও রাজাকাররা বিনা বাধায় সারেন্ডার করে। ফলে বিনা যুদ্ধে ও বিনা ক্ষয়ক্ষতিতে মুক্তিযোদ্ধারা লৌহজং থানা দখল করে। এ অপারেশনে যেসব মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহন করেন তাঁরা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল আলম, আঈদ, আনিস, খোকা, হেলাল, হুমায়ুন, নজরুল, মিলন, সেন্টু, ইকবাল, গণি, আখতার, প্রমুখ প্রায় ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশগ্রহন করেন। বিবিসি, ভয়েস অফ আমেরিকা থেকেও এ যুদ্ধের খবর প্রচারিত হয়েছিল।
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত