লামনিগাঁও এর যুদ্ধ, সিলেট
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন একটি গ্রাম লামনিগাঁও। এ গ্রামে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকিস্তানী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। মুক্তিবাহিনীর পক্ষে এ যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আখঞ্চি। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে এ যুদ্ধে এ গাঁও ছাড়তে বাধ্য হয়।
লামা থানা অভিযান, বান্দরবান
চট্টগ্রামের বান্দরবানে লামা থানা অবস্থিত। এখানে মুরং পাড়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই এলাকাটি মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ক্যাম্প হিসেবে আদর্শ ছিল। পাকবাহিনীর অত্যাচারের সমুচিত জবাব দেবার জন্য মুরং পাড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা অভিযানের পরিকল্পনা করেন। ১৫ অক্টোবর ভোররাতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা ৬ ভাগে ভাগ হয়ে যান। নেতৃত্ব দেন নায়েক ফয়েজ আহমেদ, নায়েক আব্দুল কাদের, ল্যান্স নায়েক আব্দুস সালাম, ল্যান্স নায়েক আমিনুল হক, নায়েক আব্দুস সোবহান, ও ল্যান্স নায়েক ছায়েদুল হক। তারা ১৪ তারিখে মানিকপুর থেকে রওয়ানা হয়ে ১৫ তারিখ ভোরবেলা মাতামুহুরী নদী পার হন এবং টারগেট এলাকায় পৌছান। ১০০ জনের মত মুক্তিযোদ্ধা সরাসরি আক্রমণে না গিয়ে কৌশলে বাঁশি বাজিয়ে রাজাকারদের আত্মসমর্পনের জন্য আহবান করেন। শত্রুরা অনুমান করে উল্টাপাল্টা গুলি ছুড়তে থাকে। এর পর দুপক্ষের মরণপণ যুদ্ধ শুরু হয়। চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি করতে থাকে বিধায় পাক বাহিনীর সৈন্যরা আত্মসমর্পনের আবেদন জানায়। তারা অস্ত্র জমা দিতে শুরু করে। ক্যাম্পের ভিতরে প্রবেশ করে নির্যাতন আর অত্যাচারের অনেক ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। এই অভিযানে ৪ জন রাজাকার, ২ জন পুলিশ নিহত ও কয়েকজন আহত হয়। ৩৮ টি রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। সার্বিক দিক থেকে লামা থানা অভিযান ছিল একটি বড় বিজয়।
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত