You dont have javascript enabled! Please enable it!

রামজীবনপুর যুদ্ধ, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার শ্যামপুরের তৎকালীঞ জামায়েতে ইসলামীর নেতা ও রাজাকার কমান্ডার ছাত্তার মাওলনাকে ধরার পরিকল্পনা গ্রহণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। এই ছাত্তার মাওলানার অত্যাচারে এ অঞ্চলের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। সে ৩টি থানার রাজাকারদের দায়িত্বে ছিল। তাঁর নির্দেশেই এ অঞ্চলে গণহত্যা সংঘটিত হতো। এই কুখ্যাত ছাত্তার মাওলানাই দেশপ্রেমী ও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করতো হত্যা করার জন্য। সে কারণেই তাঁকে ধরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খুবই জরুরি বিষয় হয়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাক শাসকরা ৭০ সালে নির্বাচিতদের নির্বাচন বাতিল করে এবং তথাকথিত নির্বাচন করে। এ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ও মুসলীম লীগ নেতৃত্ববৃন্দ মুখ্য ভূমিকা রাখেন। কেন্দ্রে জামায়াতের দু’জন মন্ত্রী হন। একজন মাওলানা এ কে ইউসুফ। ছাত্তার মাওলানা এ এলাকার প্রতিনিধি হন। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। মুক্তিযোদ্ধারা কানা বক্সের মাধ্যমে খবর সংগ্রহ করে, ওই কুখ্যাত রাজাকার কমান্ডার ছাত্তার মাওলানা তখন শ্যামনগর আক্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। মুক্তিযোদ্ধারা রামজীবনপুর পৌঁছাতেই সামনে রাজাকারদের উপস্থিতি টের পায়। রামজীবনপুর কালভার্টের ওপর আসতেই দু’দল মুখোমুখি হয়। দু’পক্ষের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয় প্রথএ। এক পর্যায় রাজাকার কমান্ডার ছাত্তার মাওলানাই হঠাৎ করে তার রাইফেল থেকে গুলি ছোড়ে। কিন্তু তার গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধারা পজিশন নিয়ে পাল্টা ফায়ার ওপেন করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের একজন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ক্রলিং করে ছাত্তার মাওলানার পিছনে যায় এবং তার মাথায় প্রচণ্ড জোরে অস্ত্রের আঘাত করে। পড়ে যায় মাওলানা সাহেব। তাকে মুক্তিযোদ্ধাটি পানির মধ্যে চুবিয়ে ধরে। নেতার দুরবস্থা দেখে অন্য রাজাকাররা পালিয়ে যায় অস্ত্র ফেলেই। এই কুখ্যাত রাজাকারদের ফেলে যাওয়া ৬টি রাইফেল এবং ছাত্তার মাওলানার পকেট থেকে দুই শতাধিক লোকের নামের হত্যার জন্য চিহ্নিত করা একটি তালিকা পায়। ওই হত্যা তালিকায় যাদের নাম ছিল তাঁরা কোনো না কোনোভাবে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত ছিলেন।
[১২] আশেক-ই-এলাহী

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!