রাঙ্গুনিয়া পাদুয়া গ্রাম রাজাকার ক্যাম্প অপারেশন, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া থানার পাদুয়া গ্রামে ছিল রাজাকার ক্যাম্পটির অবস্থান। পোমরায় যাওয়ার পর ক্যাপ্টেন করিম জানতে পারেন যে পাদুয়া ক্যাম্পের রাজাকাররা ঐ এলাকার সাধারন জনগনের উপর নানা ভাবে অত্যাচার করছে। ওই খবর পেয়ে ক্যাপ্টেন ক্রিম ও তাঁর সহযোগীরা পর্যবেক্ষণ ও অপারেশন বিষয়ক বিস্তারিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী অপারেশনের দিন রাত ১১ টার দিকে ক্যাপ্টেন করিমের নেতৃত্বে তাদের আশ্রয়স্থল পাদুয়ার এক জেলে বাড়ি থেকে ৩০/৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাজাকার ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। প্রায় ২০ মিনিট পর ক্যাম্পটির কাছে পৌছায় এবং পূর্বপরিকল্পনা মতো ক্যাপ্টেন করিমের নেতৃত্বে চারটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্পটির চারপাশে অবস্থান নেন। এরপর তারা চতুর্দিক থেকে ক্যাম্পটির উপর আক্রমণ চালায়। রাজাকাররা এতে প্রথমে হতচকিত হয়ে গেলে পরিস্থিতি সামলে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর পাল্টা গুলি চালায়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে তারা বেশিক্ষণ টিকতে না পেরে পালিয়ে যেতে ব্যার্থ চেষ্টা করে। এ সময় ৫/৬ জন রাজাকার কে মুক্তিযোদ্ধারা ধরে ফেলে। ধৃত রাজাকারদের পরে বেদম প্রহার করে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের গুলি বিনিময়ের সময় ৮/১০ জন রাজাকার মারা যায়। শেষ পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা ক্যাম্পের ভিতর ঢুকে ১৫/১৬ টি রাইফেল সহ ১৩/১৪ বাক্স গুলি উদ্ধার করে। ঐ অপারেশনে মুক্তিযোদ্ধারা ৩/৪ টি এলএমজি, ৬/৭ টি স্টেনগান ও ২০/২৫ টি ৩০৩ রাইফেল ব্যবহার করেন। ঐ অপারেশনের ফলে ওই এলাকা রাজাকার মুক্ত হয়। স্বাধীনতাকামি সাধারণ জনগণের মনে স্বস্তি ফিরে আসে।
[৫৯৭] কে.এম. আহসান কবীর
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত