রাজশাহী পুলিশ লাইন প্রতিরোধ
১৯৭১ সালে পুলিশ লাইনের বহু পুলিশ পাকবাহিনীকে পরাস্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে যুদ্ধ করে। ২৬ মার্চ পাক বাহিনী প্রথম বাধা প্রাপ্ত হয় শাহ আঃ মজিদ সড়কে পুলিশবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের হাতে। ইতিমধ্যে পাকবাহিনী বাঙালি পুলিশদের তৎপরতার কথা জেনে যায়। এরপর থেকেই শহরে পাকসেনাদের উল্লেখযোগ্য লক্ষ্য ছিল ইপিআর ও পুলিশ লাইন। ২৬ মার্চ সন্ধ্যার দিকে পাকসেনারা পুলিশ লাইনের কাছে গিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। আঃ সময় পুলিশ লাইনের ভিতর থেকে পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয় পক্ষের গোলাগুলি শুরু হয়। এতে বেশ কয়েক জন সাধারণ লোক নিহত হয়। এদিকে শহরের সর্ব স্তরের মানুষ রুটি, চা, পানি ও অন্যান্য খাদ্য পুলিশ বাহিনী কে সরবরাহ করে। পুলিশরা সারারাত বিক্ষিপ্ত ভাবে গুলি ছোঁড়ে। পুলিশ বাহিনীর তীব্র বাধার মুখে পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় সে মুহূর্তে। ২৭ মার্চ পুলিশ ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ ও সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সাথে আলোচনায় একমত হয় যে, কেউ কাউকে আক্রমণ করবে না। কিন্তু পাক সেনারা চুক্তি ভঙ্গ করে বিপুল বিক্রমে দুপুর বেলায় পুলিশ লাইন আক্রমণ করে। শুরু হয়ে যায় রক্ত ক্ষয়ী যুদ্ধ। পুলিশ বাহিনী আপ্রাণ চেষ্টা করে কিন্তু পাকসেনাদের ভারী অস্ত্র আর গোলাবারুদের মুখে পুলিশ বাহিনী টিকতে পারেনি। এতে বহু পুলিশ জীবন দেয়। রক্তের বন্যা বয়ে যায় পুলিশ লাইন চত্বরে। ১৭ জন পুলিশের লাশ ফেলে ওরা চলে যায়।
[৬১] মনসুর আহমেদ খান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত