You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.15 | রসুলপুর স্লুইস গেট আক্রমণ, গাইবান্ধা - সংগ্রামের নোটবুক

রসুলপুর স্লুইস গেট আক্রমণ, গাইবান্ধা

গাইবান্ধার রসুল্পুর স্লুইস গেটে অবস্থানকারী পাক সেনাদের উপর আক্রমণের পালা। কালাসেনারা চরে ইউ.পি. সদস্য মক্সুদ আলী ও রহিম উদ্দিন সরকারের সহয়াতায় অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের কোম্পানি কমান্ডার এম.এন.নবী লালু ১৫ অক্টোবর রাতে খবর পান স্লুইস গেটের হানাদার পাক সেনাদের বেশ ক’জন গাইবান্ধায় যাওয়ায় শত্রুসেনারা সংখ্যা কম। তিনি প্লাটুন কমান্ডারদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ত্বরিত স্লুইস গেট আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তখন কালসেনারা চরে সুন্দরগঞ্জ ও দাড়িয়াপুর ব্রিজ অপারেশনের জন্য রঞ্জু কোম্পানি এবং গাইবান্ধাকে একটা পকেটে পরিণত করার পরিকল্পনার আওতায় সাইফুল আলম সাজার সাজা কোম্পানি ও খায়রুল আলম কোম্পানি অবস্থান নিয়েছিল। পাশের চরেই ছিল রোস্তম কোম্পানি। পিছনে মোল্লার চরে পালোয়ান কোম্পানি ও মতি মিয়াদের পরিচালিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের বীর মুক্তিযোদ্ধারা। লালু কোম্পানির পরিকল্পনার নেতৃত্বে একটি প্লাটুনকে স্লুইস গেট বিধ্বস্ত কারণ, লালু কোম্পানির দুলাল কাদেরী ও আঃ কাইয়ুম ও আঃ কাইয়ুম টিপুর নেতৃত্বাধীন প্লাটুনকে জমিদার বাড়ীতে অবস্থান নিয়ে আক্রমণ পরিচালনা, মোজাম্মেল হক মণ্ডলের নেতৃত্বধীন প্লাটুনকে কামারজানী থেকে হানাদার সৈন্যরা না আসতে পারে তাঁর জন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন ও আব্দুল বাসেত সরকারের নেতৃত্বে গ্রেনেড নিয়ে সজ্জিত সুইসাইড গ্রুপ করে, সাদেকুর রহমানের নেতৃত্বাধীন এক্সপ্লোসিভ গ্রুপটি নিয়ে সাহসী বীরযোদ্ধা এন.এন.নবী লালু ঐ রাতেই স্লুইস গেটে পৌঁছেন। বল্লামঝাড়ের সামছুল, দুদু, আঃ সাত্তার, বজলার ও সোবহান এবং আঃ কুদ্দুস ও ফুলছড়ির লুৎফরকে নিয়ে বাসতের নেতৃত্বধীন সুইসাইড টিম ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকসেনাদের উপর। হানাদার বাহিনীকে রক্ষায় কামারজানি থেকে পাকসেনারা এগিয়ে আসে। তারা মোজাম্মেল হকের প্লাটুনের যোদ্ধাদের গুলির রেঞ্জের আওতায় এলেই মুক্তিযোদ্ধারা গুলি বর্ষণ শুরু করেন। কোম্পানির কমান্ডারের নির্দেশে লুৎফর রহমান এক্সপ্লোসিভ গ্রুপটিকে স্লুইস গেট বিধ্বস্ত করার নির্দেশ দেন। আলমনির নেতৃত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেকুর, আঃ বাকী, জলিল, মোজাফফর আদেল ও লুৎফর ব্রিজটির মারাত্নক ক্ষতিসাধন করেন। লালু কোম্পানির বীর যোদ্ধারা ২ ঘন্টাকাল গুলি বিনিময় করেন। সুইসাইড টিমসহ মুক্তিযোদ্ধারা ৭ জন পাকিস্তানী মুজাহিদকে গ্রেফতার করতে ও ৩ জন পাকসেনাকে খতম করতে সক্ষম হন। যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা ৪টি এলএমজি দখল করে এবং হানাদার বাহিনী পিছু হটে যেতে বাদ্ধ হয়।
[৫৮০] ড. মোঃ মাহবুবর রহমান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদি