যৌথ কমান্ড
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে গঠিত হয় ভারত ও বাংলাদেশের দুই সামরিক বাহিনীর সমন্বয়ে দুই দেশের ‘যৌথ কমান্ড’। এই যৌথ কমান্ডের কাছেই হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ৯ মাস যুদ্ধের পর আত্মসমর্পণ করে। সেদিনকার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রিরা গান্ধী ভারত সরকার পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা অর্জনের ঐতিহাসিক বন্ধুর ভুমিকা পালন করেছিল। ভারত সরকার প্রায় ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল এবং প্রশিক্ষণসহ মুক্তি বাহিনীর জন্য যুদ্ধ পরিচালনার যাবতীয় রসদ সরবরাহ করেছিল। শুধু তাই নয়, ভারত সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে সর্বাত্মক শক্তিও নিয়োগ করেছিল। সেদিনকার প্রশ্চিম পাকিস্তানে বন্দি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবিতে সারা পৃথিবীতে প্রচার চালিয়েছিল ইন্দিরা গান্ধির সরকার। কিন্তু এত কিছুর পরও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সরাসরি সীমান্ত অতিক্রম করে পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে প্রবেশ রণাঙ্গনে আকস্মিক এই আক্রমণের পাল্টা জবাব দিতে থাকে ভারতীয় বাহিনী পশ্চিমে। গোটা পরিস্থিতি পালতে যায়। ইন্দিরা গান্ধী তাঁর মন্ত্রীসভার জরুরি বৈঠকে বসে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এর পরই গঠিত হয়। বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ‘যৌথ কমান্ড’। ডিসেম্বরের ৩ তারিখ শুরু হয় পূর্ব রণাঙ্গনে সর্বাত্মক যুদ্ধ। এই সর্বাত্মক যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তান বাহিনী পরাজিত হয়। তারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। বন্দি হয় ৯৩ হাজার পাকিস্তানী সৈন্য।
হারুন হাবীব
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত