রঘুরচক রেইড, সিলেট
রঘুরচক জায়গাটি অবস্থিত সিলেটের জকিগঞ্জ সড়োকে জকিগঞ্জ থেকে ১৫ কি.মি উত্তরে। এখানে পাকিস্তানী বাহিনীর অমানুষিক নির্যাতনের কারণে পাকিস্তানী বাহিনীকে উৎখাত করার জন্য জুলাই মাসের শেষ দিকে একটি দল গঠিত হয়। এই দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন তৎকালীন ন্যাপ নেতা সাইদুর রহমান, খান মাহতাব, সহকারী ছিলেন ছাত্রনেতা কায়সার। প্রায় ২০০ মুক্তিযোদ্ধার এই দলটি ১ আগস্ট সন্ধ্যায় জামালপুর পৌঁছে। এখান থেকে যোগ দেয় ছাত্রনেতা নিজামউদ্দিন আহমদ ও আরেকজন সহকাড়ি। কিন্তু অবিরাম বৃষ্টির কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের রেখে ৬০/৭০ জন রাত ১০টায় নাতমপুর পৌঁছান। এখানে কিছু লোক যোগ দেয়। সবাই মিলে নৌকযোগে সুরমা নদী পার হওয়ার সময় হঠাৎ করে পাকিস্তানী বাহিনী গুলিবর্ষণ করে। এতে ৩/৪ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হলেও মুক্তিবাহিনী পিছু হটেনি। তীরে নেমে বামে সাইদুর রহমান খান, ডানে কায়সার আক্রমণ করে পাকিস্তানী বাহিনীর ক্যাম্পে ঘেরাও শত্রুদের উপর গুলিবর্ষণ করতে করতে এগিয়ে যেতে থাকে। বশির আহমদ, সালামত আলী, জামালউদ্দিন, আব্দুস শুকুর, আব্দুল খালিক, ইলকাস আলী, মোহাম্মদ কামাল, আব্দুল লতিফ, নোমান আহমদ, আমী আলী সহ বেশ কয়েকজন দুর্দান্ত যোদ্ধা। অবশেষে আকাশে ভোরের সূর্য উঠার ফলে সাথে সাথে যুদ্ধ সমাপ্ত হয়। এই যুদ্ধের পর পাকিস্তানী বাহিনী রঘুচরে আসার সাহস করেনি। কিন্তু এই যুদ্ধে স্বাধীনতার বেদিমূলে আত্মহূতি দিয়ে শহীদ হন রফিক আহমদ। বেশ কিছু পাকিস্তানী সৈন্য মারা যায়।
[৫৫] নিবেদিতা দত্ত
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত