You dont have javascript enabled! Please enable it!

মোহাম্মদ আবু তাহের, লে. কর্নেল, বীরউত্তম

মোহাম্মদ আবু তাহের পাকিস্তানী সেনাবাহিনীতে মেজর পদে চাকুরি করতেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন। জুন ১৯৭১ তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। ১১ নং সেক্টরে ছিলেন। মেজর মোঃ আবু তাহের নভেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত ও যুদ্ধাকালীন ফ্লাইট লেঃ এম হামিদুল্লাহ খান নভেম্বর ১৯৭১ হতে ডিসেম্বর ১৯৭১ পর্যন্ত ১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মেজর মোঃ আবু তাহের রংপুর জেলার চিলমারী ও বর্তমান জামালপুর জেলার শ্রীবর্দ্দী থানায় ধানুয়া কামালপুর সহ বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানী সৈন্য ও তাদের তাবেদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতার পরিচয় দেন। যুদ্ধ পরিকল্পনায়, নির্দেশনায় এবং যুদ্ধ পরিচালনায় দক্ষতা ও সাহসিকতার পরিচয় দেন। ১৪ নভেম্বর ১৯৭১ বর্তমান জামালপুর জেলার শ্রীবর্দী থানার ধানুয়া কামালপুর ও কামালপুরে পাকিস্তানী সৈন্যরা বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে আহত হন। তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সাহসীকতার জন্য মেজর মোঃ আবু তাহের বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত হন।
দেশ স্বাধীনের পর মেজর মোঃ আবু তাহের বীর উত্তম লেঃ কর্নেল হন এবং ১৯৭২ সালে সেনাবাহিনীর চাকুরি হতে বহিস্কার হন। এক বিশেষ সামরিক আদালতে রাতে ২১ জুলাই ১৯৭৬ তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
লেঃ কর্নেল মোঃ আবু তাহের বীর উত্তম ১৯৫৪ সালে কুমিল্লা হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। সিলেট এম সি কলেজ থেকে আই এ এবং ১৯৫৮ সালে একই কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন। ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ কল্যাণে এম এ. প্রথম পর্ব শেষ করার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চাকুরিতে যোগদান করেন। ছাত্র জীবন হতে প্রথমে কমিউনিষ্ট পার্টি ও পরে পূর্বে বাংলা সর্বহারা পার্টির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। লেঃ কর্নেল মোঃ আবু তাহের বীর উত্তম এর ডাক নাম তাহের, এম এ. পিতা-মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদ, রেলোয়েতে ষ্টেশন মাষ্টার ছিলেন। মাতা- আশরাফুন নেছা, গ্রাম কাজলা, থানা পূর্বধলা, জেলা নেত্রকোনা। স্ত্রী মোসাঃ লুৎফা তাহের। ২ ছেলে ও ১ মেয়ে। ছেলে আবু কাওসার, ডাকনাম যীশু, এইচ এস সি পাশ করে, ভারতে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় পড়েছেন ছেলে। আবু আহসান মিশু, মেয়ে জয়া তাহের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম এ। ৭ ভাই ও ৩ বোন। ভাই আরিফুর রহমান সরকারি চাকুরি করতেন, আবু ইউসুফ বিমান বাহিনীতে চাকুরি করতেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে সৌদি আরবে ডেপুটেশনে ছিলেন। পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধ যোগদান করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ সাহসিকতার জন্য বীর বিক্রম উপাধিতে ভূষিত হন। ডঃ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, আবু সাঈদ, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, শাখাওয়াত হোসেন, ডাক নাম বাহার, মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা যুদ্ধে গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এবং সাহসিকতার জন্য বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত হন, ১৯৭৬ সালে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস আক্রমণে নিহত হন। ওয়ারেছাত হোসেন ডাকনাম বেলাল, বি.এ. পাশ, মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত হন। বোন সালেহা, ডালিয়া ও জুলিয়া, সবাই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
[৪৩] মোঃ আবদুল হান্নান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ অষ্টম খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!